Sunday, December 21, 2025
spot_img
Homeইমিগ্রেশন তথ্যট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণ সিদ্ধান্ত

ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণ সিদ্ধান্ত

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ও অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোরতা আনতে নতুন করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। সর্বশেষ এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাঁচটি নতুন দেশকে পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে আংশিক সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত ভ্রমণ নথি বহনকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার ঘোষিত এই সিদ্ধান্তকে চলমান নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে প্রশাসন। সম্প্রতি থ্যাংকসগিভিং ছুটির সময়ে দুইজন ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে গুলির ঘটনায় এক আফগান নাগরিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর এই পদক্ষেপের ঘোষণা আসে। প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং যাচাই প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

চলতি বছরের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছিলেন, ১২টি দেশের নাগরিকদের জন্য সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে এবং আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর অতিরিক্ত সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাঁর প্রথম মেয়াদের বহুল আলোচিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নীতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। সে সময় নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। পাশাপাশি বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

সর্বশেষ ঘোষণায় পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া। এর ফলে এসব দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ কার্যত বন্ধ হয়ে গেল। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা ভ্রমণ নথি ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রেও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এ ছাড়া আরও ১৫টি দেশকে আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, কোট দিভোয়ার, ডোমিনিকা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, টোঙ্গা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে। এসব দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা ও ভ্রমণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করা হবে।

প্রশাসনের ঘোষণায় বলা হয়েছে, যেসব দেশের ওপর ভ্রমণ সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে, সেসব দেশে ব্যাপক দুর্নীতি, জাল বা অবিশ্বস্ত নাগরিক নথি এবং অপরাধ সংক্রান্ত তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের আগে সংশ্লিষ্ট নাগরিকদের যথাযথভাবে যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়ে। পাশাপাশি কিছু দেশে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করার হার বেশি, আবার কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো নাগরিকদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। কোথাও কোথাও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সরকারি নিয়ন্ত্রণের অভাবও যাচাই প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে বলে দাবি করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, এই নিষেধাজ্ঞা ও সীমাবদ্ধতা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকা বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ রোধের জন্য প্রয়োজনীয়। একই সঙ্গে বিদেশি সরকারের সহযোগিতা নিশ্চিত করা, অভিবাসন আইন কার্যকর রাখা এবং পররাষ্ট্রনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী লক্ষ্য পূরণ করাও এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য।

এদিকে, ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত আফগান নাগরিক আদালতে হত্যা ও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে এবং এটি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments