ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর ও কম্পিউটার চিপের আমদানি ঠেকাতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য হলো, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কারখানা স্থাপনে উৎসাহিত করা। তবে যেসব প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে, তারা এই নতুন শুল্ক থেকে অব্যাহতি পাবে। এই খবরটি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় প্রকাশিত হয়েছে।
বুধবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমরা সেমিকন্ডাক্টর এবং চিপের ওপর প্রায় ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব। তবে যে কোম্পানিগুলো আমাদের দেশে উৎপাদন সুবিধা গড়ে তুলছে, তাদের জন্য এই নিয়ম কার্যকর হবে না।” এই ঘোষণার ফলে অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠান, যারা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা লাভবান হবে।
যদিও এই ঘোষণা অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত মনে হয়নি। কারণ, গত মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, সেমিকন্ডাক্টরের ওপর নতুন শুল্ক আসতে পারে। এই ঘোষণার পর এশিয়ার প্রধান চিপ উৎপাদনকারী দেশগুলো তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাইওয়ানের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের প্রধান লিউ চিন-চিং বলেছেন, বিশ্বের বৃহত্তম চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি যুক্তরাষ্ট্রে ১৬৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করায় তারা শুল্কমুক্ত থাকবে। একইভাবে দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, তাদের শীর্ষ চিপ নির্মাতা স্যামসাং এবং এসকে হাইনিক্স এই শুল্কের আওতায় পড়বে না। কারণ, গত জানুয়ারিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিপাইনের মতো দেশ, যাদের রপ্তানির ৭০ শতাংশই সেমিকন্ডাক্টর খাত থেকে আসে, তারা এই সিদ্ধান্তে ক্ষতির আশঙ্কা করছে। ফিলিপাইনের সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স শিল্প সমিতির প্রেসিডেন্ট ড্যান লাচিচা এই শুল্ককে তাদের জন্য ‘ধ্বংসাত্মক’ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিপস অ্যাক্ট পাস করিয়েছিলেন। এই আইনের মাধ্যমে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি ও কর ছাড় দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্পের এই নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি বাইডেনের ওই নীতিরই একটি ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। নতুন এই শুল্ক বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে, যদিও এর বিস্তারিত নিয়মাবলী এখনও স্পষ্ট নয়। এর আগে, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, গাড়ি এবং ওষুধ শিল্পের ওপরও শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।