এক কিশোরের মর্মান্তিক আত্মহত্যার ঘটনায় জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম Roblox ও Discord-এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার এই ১৫ বছর বয়সী কিশোর মাত্র ১২ বছর বয়সে এক প্রাপ্তবয়স্ক যৌন শিকারীর টার্গেটে পরিণত হয়। প্রথমে Roblox-এ এবং পরবর্তীতে Discord-এ তাকে ফাঁদে ফেলে জোরপূর্বক অশ্লীল ছবি পাঠাতে বাধ্য করা হয়। অবশেষে ২০২৪ সালের এপ্রিলে সে আত্মহত্যা করে।
শিশুটির পরিবার আদালতে দায়েরকৃত মামলায় বলেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের প্ল্যাটফর্ম এমনভাবে পরিচালনা করেছে যেখানে শিশুদের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, Roblox-এ সে ৯ বছর বয়সে গেম খেলা শুরু করে এবং অভিভাবকীয় কন্ট্রোল থাকলেও শিকারী তাকে ধীরে ধীরে তা বন্ধ করতে প্রলুব্ধ করে। পরবর্তীতে Discord-এ কথোপকথন স্থানান্তরের মাধ্যমে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
অভিযোগে বলা হয়, Discord-এ তাকে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাঠাতে বাধ্য করা হয় এবং শিকারী হুমকি দেয় যে ছবি প্রকাশ করে দেবে। ভয়ে কিশোর তা মানতে বাধ্য হয়। এই মানসিক যন্ত্রণাই শেষ পর্যন্ত তার জীবনের অবসান ডেকে আনে।
মামলায় Roblox ও Discord-কে দায়ী করে বলা হয়েছে, যথাযথ বয়স যাচাই বা পরিচয় নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থা না থাকার কারণে এই শিকারী সহজেই শিশুটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, প্ল্যাটফর্মগুলো নিজেদের নিরাপদ হিসেবে প্রচার করলেও বাস্তবে সেগুলো শিশুদের জন্য বিপজ্জনক ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
পরিবারের আইনজীবীরা দাবি করেন, যদি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহারকারীদের স্ক্রিনিং, বয়স যাচাই এবং কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করত, তাহলে এ ধরনের শিকারী কখনো ওই কিশোরের কাছে পৌঁছাতে পারত না।
যদিও Roblox ও Discord উভয় প্রতিষ্ঠানই নিরাপত্তার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে। Roblox দাবি করেছে, তারা শতাধিক নতুন নিরাপত্তা ফিচার চালু করেছে এবং ২৪ ঘণ্টা মানব মডারেশন টিম কাজ করছে। Discord জানিয়েছে, তাদের প্ল্যাটফর্মে ১৩ বছরের নিচে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয় না এবং উন্নত প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা টিম একসঙ্গে কাজ করে।
তবে এ নিয়ে একাধিক মামলা আগেও হয়েছে। আইনজীবী প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এটি তাদের নবম মামলা যেখানে Roblox বা Discord-এর মাধ্যমে শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে। শিশু সুরক্ষা সংগঠনগুলোও দীর্ঘদিন ধরে এই প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে সমালোচনা করে আসছে।
এই মামলা এখন আদালতে বিচারাধীন। শিশুটির পরিবার ক্ষতিপূরণ ও জুরি ট্রায়াল দাবি করেছে।