যুক্তরাষ্ট্রের একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য কোর্সে জেন্ডার আইডেন্টিটি বিষয়ক পাঠদান নিয়ে তীব্র বিতর্কের পর এক নারী অধ্যাপককে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, তিনি কোর্সের অনুমোদিত পাঠ্যসূচির বাইরে গিয়ে বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট ডিনকেও প্রশাসনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে, যা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, এক শিক্ষার্থী ক্লাসে অধ্যাপকের বক্তব্য থামিয়ে বলেন—এ ধরনের বিষয় পড়ানো “আইনগতভাবে বৈধ নয়।” তিনি সাবেক প্রেসিডেন্টের একটি নির্বাহী আদেশের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে কেবল দুটি নির্দিষ্ট লিঙ্গ স্বীকৃত এবং সরকারি অর্থ কোনোভাবেই “জেন্ডার আইডিওলজি” প্রচারে ব্যবহার করা যাবে না।
অধ্যাপক পাল্টা জবাবে বলেন, “আমরা যা করছি, তা কোনোভাবেই বেআইনি নয়।” তিনি শিক্ষার্থীকে পরামর্শ দেন বিভাগীয় প্রধান বা স্নাতক কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং এরপর ক্লাস ত্যাগ করতে বলেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, অধ্যাপককে বারবার কোর্স কনটেন্ট পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে তা অনুমোদিত কোর্স বিবরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, কিন্তু তিনি তা মানেননি। অন্যদিকে, অধ্যাপকের আইনজীবী এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন—পাঠদান ছিল সম্পূর্ণ অনুমোদিত কাঠামোর মধ্যে এবং বহু বছর ধরে একই ধরনের ক্লাস কোনো প্রশ্ন ছাড়াই পরিচালিত হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এ বরখাস্তকরণ অধ্যাপকের সাংবিধানিক অধিকার ও একাডেমিক স্বাধীনতার পরিপন্থী।
এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত অডিও রেকর্ডিং ও ইমেইল নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেখানে দেখা যায় শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্টকে অভিযোগ করছেন এবং বরখাস্তের দাবি জানাচ্ছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় এ ভিডিও ও অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেনি।
এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সিভিল রাইটস ডিভিশনের একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামাজিক মাধ্যমে জানান, বিষয়টি তারা “গভীরভাবে উদ্বেগজনক” হিসেবে বিবেচনা করছেন এবং খতিয়ে দেখবেন। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অনুমোদিত পাঠ্যসূচির বাইরে কনটেন্ট অন্তর্ভুক্ত করার কারণে সংশ্লিষ্ট ডিন ও বিভাগীয় প্রধানকে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে।