যুক্তরাষ্ট্রের উটাহে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ওপর নির্মম হামলার ঘটনার তদন্তে অচিরেই ধরা পড়ল সন্দেহভাজন। হত্যার তদন্তে সরকারি কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষকে সাহায্যের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন, আর সেই আহ্বানেই কার্যকর ভূমিকা রাখলো এক পিতার তীক্ষ্ণ সতর্কতা।
পুলিশ ও ফেডারেল সংস্থাগুলো হত্যাকারীর ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করার পর, একজন পিতা তার ছেলের সঙ্গে পরিচয় মিলিয়ে ধরেন। হত্যাকাণ্ডের পর ছেলেটি এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদ থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। পিতার প্রশ্নের জবাবে ২২ বছর বয়সী যুবক নিজের অপরাধ স্বীকার করে।
প্রাথমিকভাবে সে আত্মসমর্পণ করতে চায়নি, কিন্তু পিতার পরামর্শে যুবক তার স্থানীয় যুব পাদ্রির কাছে অপরাধের কথা জানায়। পরে পরিবারের একজন বন্ধু পুলিশকে তথ্য জানান। তিন ঘণ্টারও বেশি দূরত্বে থাকা ওয়াশিংটন কাউন্টি শেরিফের অফিস তথ্যটি উটাহ কাউন্টি এবং এফবিআইকে পৌঁছে দেয়।
সেখানে রাতেই যুবক গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারের আগে ফেডারেল সংস্থা প্রায় ৭,০০০টি হিটের সূত্র সংগ্রহ করেছিল, যা ২০১৩ সালের বস্টন ম্যারাথন বিস্ফোরণের পর সবচেয়ে বেশি। তবে যুবকের পিতা ও পরিবারের বন্ধুর একটি টিপিই বড় অগ্রগতি আনে।
হত্যাকারী ছাদ থেকে প্রায় ১৫০ গজ দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে গুলি চালায়, যা এক হাজারের বেশি মানুষের উপস্থিতির মধ্যে হয়। ২০টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রায় ২০০ সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, ১ লাখ ডলারের পুরস্কার ঘোষণা এবং কঠোর অনুসন্ধানের পর অবশেষে হত্যা মামলার আসল অভিযুক্তকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, অভিযুক্ত যুবক একজন শিক্ষানবিশ বৈদ্যুতিক প্রোগ্রামের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার রাজনৈতিক প্রবণতা সম্প্রতি বাড়তে থাকে। হত্যার আগে সে পরিবারের সঙ্গে ডিনারে বসে বক্তব্যকর্তার বিরোধিতা জানিয়েছিল। এছাড়াও, বিভিন্ন বার্তায় সে আগ্রাসী আচরণের ইঙ্গিত দেয়।
পুলিশ হুমকিমূলক বার্তা এবং প্রমাণ সংগ্রহ করে একটি বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল উদ্ধার করে। সেই রাইফেলের খালি গুলিতে অশোভন বাক্যাংশ খোদাই করা ছিল। অভিযুক্ত বর্তমানে জামিন ছাড়াই জেলবন্দি এবং তার বিরুদ্ধে হত্যার, অস্ত্র ব্যবহার এবং বিচারবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উটাহের সরকারি কর্মকর্তারা মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন এবং নিশ্চিত করেছেন যে, যে কোনোভাবেই অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা হবে।