যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির ক্রসভিল শহরে এক যুদ্ধস্মৃতিস্তম্ভ ঘিরে ঘটে গেল রক্তাক্ত ঘটনা। এক ব্যক্তি স্মৃতিস্তম্ভ ও পতাকার প্রতি মাঝের আঙুল দেখিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এ ধরনের আচরণের জন্য এলাকাবাসীর কাছে পরিচিত ছিলেন। পরিবার ও স্থানীয়দের মতে, তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন, পাশাপাশি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে না পারার ক্ষোভও ছিল তার মধ্যে।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তিনি স্মৃতিস্তম্ভ এলাকায় হাঁটাহাঁটি করছিলেন। এসময় অনেক পথচারী ও গাড়ি থেমে বিষয়টি লক্ষ্য করতে শুরু করে। কিছু লোক তাকে উদ্দেশ্য করে ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং তর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেই মুহূর্তে তিনজন ব্যক্তির সঙ্গে তার উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে কাঠের লাঠি নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ আরও বেড়ে যায়। পরিবারের দাবি, লাঠিটি আসলে তার হেঁটে চলার ভরসা ছিল, কারণ তিনি কৃত্রিম পা ব্যবহার করতেন।
ঘটনার এক পর্যায়ে এক ব্যক্তি গাড়ি থেকে অস্ত্র নিয়ে ফিরে এসে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পুরো ঘটনাটি ভিডিওতে ধারণ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। অনেকের মতে, যা-ই হোক না কেন, এভাবে গুলি করে হত্যা ন্যায্য ছিল না।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রথমে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হলেও, পরে অভিযোগ রূপান্তরিত হয় দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যায়। তিনি বর্তমানে জামিনবিহীন অবস্থায় কারাগারে রয়েছেন এবং আত্মপক্ষ সমর্থনে আত্মরক্ষার যুক্তি দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অন্যদিকে নিহতের পরিবার বলছে, ভিডিও প্রমাণ স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে তিনি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিলেন এবং পরিস্থিতি এড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বেচ্ছায় গাড়ি থেকে অস্ত্র নিয়ে ফিরে এসে গুলি চালান।
নিহতের ভাতিজি জানান, তার চাচা ছিলেন একেবারেই ভিন্ন স্বভাবের মানুষ। তিনি সাইকেলে ঘুরে বেড়াতেন, প্রিয় কুকুরকে নিয়ে সময় কাটাতেন এবং সাধারণ জীবনযাপন করতেন। সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে না পারার ক্ষোভ ও সরকারের প্রতি অবিশ্বাসই হয়তো তার এই অদ্ভুত আচরণের মূল কারণ ছিল। তবে পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, মত প্রকাশের জন্য কাউকে জীবন দিতে হবে – এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।