একটি নতুন বৈশ্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হৃদয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস বাড়ানো ব্যায়াম অকালমৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৪০% কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই মেটা-অ্যানালাইসিসে ৭ মিলিয়ন মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যা ৮৫টি আলাদা গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
গবেষকরা জানান, শারীরিক কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যকে আরও বেশি প্রভাবিত করতে পারে, যা আগে আমরা অনুমান করতাম তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বয়স এখানে কোনো বাধা নয় — বড় বয়সেও ব্যায়াম শুরু করলে জীবনকাল বাড়ানো সম্ভব। বরং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি আরও কার্যকর হতে পারে, কারণ তাদের একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা থাকায় ব্যায়ামের প্রভাব ১০–১৫% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শারীরিক কার্যক্রম “এক ধরনের যাদু”। এটি এমনভাবে ঝুঁকি কমায় যা ওষুধের মাধ্যমে সম্ভব নয়। তাই চিকিৎসকেরা রোগীদের বলছেন, ব্যায়াম সত্যিই “যৌবনের অমর উৎস”।
গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ থেকে ৩০০ মিনিট মাঝারি মাত্রার বা ৭৫ থেকে ১৫০ মিনিট উচ্চ মাত্রার ব্যায়াম করলে (যেমন জগিং, রেসওয়াকিং) সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। এই ধরণের নিয়মিত ব্যায়াম বিশেষভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, যা বিশ্বে প্রধান মৃত্যুর কারণ। নিয়মিত ব্যায়ামকারীদের হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৪০% কমেছে, ক্যান্সারের ঝুঁকি ২৫% পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, যারা অতীতে কোনো ব্যায়াম করতেন কিন্তু পরে থেমে গেছেন, তাদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় তাদের মতোই, যারা সবসময় নিষ্ক্রিয়। তাই এখনই শারীরিক কার্যক্রম শুরু করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন ব্যায়াম শুরু করলে ধীরে ধীরে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শুরু করা উচিত। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট brisk walk বা দ্রুত হাঁটার লক্ষ্য রাখা উচিত। কার্ডিওর সঙ্গে কিছু রেজিস্ট্যান্স ব্যায়াম যুক্ত করলে শরীর আরও শক্তিশালী হয়, যেমন হালকা ওজন বহন করা, সাঁতার বা সাইক্লিংয়ের সময় প্রতিরোধ বাড়ানো।
গুরুত্বপূর্ণ হলো নিয়মিত এবং আনন্দের সাথে শরীরকে সচল রাখা। যেভাবেই হোক, চলাফেরা করা আর ব্যায়াম চালিয়ে যাওয়া হলো সুস্থ ও দীর্ঘায়ু জীবনের চাবিকাঠি।