জনপ্রিয় মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপের বিরুদ্ধে গুরুতর সাইবার নিরাপত্তা ত্রুটির অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এক কর্মকর্তা। তিনি অভিযোগ করেছেন, অ্যাপটিতে রয়েছে “পদ্ধতিগত সাইবার নিরাপত্তা ব্যর্থতা” যা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
মামলায় বলা হয়, ২০২১ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ওই কর্মকর্তা হোয়াটসঅ্যাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের দুর্বলতা খুঁজে পান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, প্রায় দেড় হাজার ইঞ্জিনিয়ার কোনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই ব্যবহারকারীদের সংবেদনশীল তথ্যের অ্যাক্সেস পেতেন। এমনকি এসব তথ্য স্থানান্তর বা চুরি হলেও তা শনাক্ত বা ট্র্যাক করার কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপ যথাযথ ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা মনিটরিং সেন্টার রাখেনি, ব্যবহারকারীর তথ্যের অ্যাক্সেস নজরদারির জন্য পর্যাপ্ত সিস্টেম ছিল না এবং কোথায় ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষিত হচ্ছে তার সঠিক তালিকাও রাখা হয়নি। এসব ঘাটতি কেবল ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তাকেই নয়, প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে করা সমঝোতাকেও লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ।
মামলায় দাবি করা হয়, এসব সমস্যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানালেও কর্মকর্তার বক্তব্য গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরং তার কাজে সমালোচনা শুরু হয় এবং প্রথমবার নিরাপত্তা ত্রুটি প্রকাশের মাত্র তিন দিনের মাথায় তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক কর্মমূল্যায়ন দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী জানান, পরবর্তীতে তিনি মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)-কে বিষয়টি জানান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকেও লিখিতভাবে অবহিত করেন। এরপর তিনি মার্কিন পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য প্রশাসনেও অভিযোগ দাখিল করেন। তবে কোম্পানি সেই অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে বরখাস্তের পথে হাঁটে।
মামলায় দাবি করা হয়েছে, বরখাস্তের সময় ও প্রক্রিয়া প্রমাণ করে যে, এটি আসলে এক ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ছিল। সাবেক ওই কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তাকে নিয়মিত হয়রানি করা হয়েছে কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ঘাটতি প্রকাশ ও আইনি বাধ্যবাধকতা পালনের দাবি জানানোর কারণে।