তিনজন সাবেক উচ্চপদস্থ এফবিআই কর্মকর্তা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন, যেখানে তারা দাবি করেছেন যে, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তাদের চাকরি হারাতে হয়েছে। মামলার নথি অনুযায়ী, এফবিআই পরিচালক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল তাদের বরখাস্তের নির্দেশ কার্যকর করেছেন হোয়াইট হাউস ও বিচার বিভাগের চাপের মুখে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, পরিচালক স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন—তার চাকরি টিকিয়ে রাখতে হলে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তদন্তে জড়িত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া জরুরি। এমনকি তিনি স্বীকার করেন, এটি এফবিআইয়ের অভ্যন্তরীণ নিয়মের সরাসরি লঙ্ঘন এবং আইনগত ঝুঁকি রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তদন্তে যুক্ত সব কর্মকর্তাকেই টার্গেট করা হয়েছে। অবসর গ্রহণের যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক, তাদের সবাইকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। অথচ, সেনেটের শুনানিতে শপথ নিয়ে পরিচালক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কাউকে বরখাস্ত করা হবে না।
একজন এজেন্ট, যিনি বিশেষ কাউন্সেল তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন, তাকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তার কর্মদক্ষতার সুনাম ছিল উভয় রাজনৈতিক দলে দুর্নীতি তদন্তে সমানভাবে কাজ করার কারণে।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, এফবিআইয়ের শীর্ষ পদে আসীন হতে গেলে রাজনৈতিক আনুগত্য যাচাই করা হচ্ছিল। প্রার্থীদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তারা কাকে ভোট দিয়েছেন এবং প্রেসিডেন্টের সম্পত্তিতে তল্লাশি চালানো এজেন্টদের দায়বদ্ধ করা উচিত কিনা।
অভিযোগ অনুযায়ী, নতুন প্রশাসন আসার পর এফবিআইয়ের ভেতরে বড় পরিসরে ছাঁটাই অভিযান শুরু হয়। কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করতে চাপ দেওয়া হয়, যাতে ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার তদন্তে যুক্ত ব্যক্তিদের নাম থাকে। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এমন তালিকা ফাঁস হলে তদন্তকারীরা হুমকির মুখে পড়তে পারেন।
একইসঙ্গে, ডেপুটি ডিরেক্টরের পদে বসা আরেক কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজস্ব প্রভাব বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বিশেষ কিছু মামলায় অতিরিক্ত মনোযোগ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার প্রধান ফোকাস ছিল ক্যাপিটল হামলায় পাইপ বোমা রাখা ব্যক্তিকে খোঁজা, সুপ্রিম কোর্টের গোপন রায় ফাঁস এবং হোয়াইট হাউসে মাদক পাওয়ার ঘটনায়।
মামলাকারীরা আদালতের কাছে তাদের চাকরিচ্যুতি “অবৈধ” ঘোষণা, নাম পরিষ্কার করার শুনানি এবং পুনর্বহালের আবেদন জানিয়েছেন। তবে এফবিআই এবং বিচার বিভাগ এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।