মিডিয়া দুনিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের অবসান ঘটেছে। পরিবারের মধ্যে সম্পাদিত এক চুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হলো, পরিবারের রক্ষণশীল মতাদর্শী বড় ছেলে এখন থেকে এই সাম্রাজ্যের ওপর আরও দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবেন। এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ফক্স নিউজ ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম।
সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে পরিবারের ভেতরে উত্তরাধিকারের প্রশ্নে যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল, তার সমাধান হলো। একইসঙ্গে পরিবারের প্রধানের মৃত্যুর পর সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ওঠা সব ধরনের প্রশ্নও স্পষ্টভাবে মিটে গেল।
বাস্তবধর্মী এই ঘটনার নাটকীয় দিক এতটাই গভীর যে, বলা হয়ে থাকে জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ ‘সাকসেশন’-এর অন্যতম অনুপ্রেরণা ছিল এই পরিবারের দ্বন্দ্ব।
চুক্তি অনুযায়ী, বড় ছেলের ভাইবোন—একজন ব্যবসায়ী, একজন প্রযোজক এবং আরেকজন পারিবারিক উত্তরাধিকারের সঙ্গে যুক্ত—প্রত্যেকে প্রায় ১১০ কোটি ডলারের ভাগ পাবেন। জানা গেছে, তাঁরা ছয় মাসের মধ্যে ফক্স ও নিউজ করপোরেশনের নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করবেন।
কোম্পানির ঘোষণায় বলা হয়েছে, ফক্স করপোরেশনের প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ ভোটিং শেয়ার এবং নিউজ করপোরেশনের প্রায় ১ কোটি ৪২ লাখ শেয়ার বিক্রি করা হবে। সর্বশেষ বাজারমূল্যের তুলনায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ছাড়ে এই লেনদেন সম্পন্ন হবে।
এদিকে বড় ছেলে এবং তাঁর দুই ছোট বোনের স্বার্থে একটি নতুন পারিবারিক ট্রাস্ট গঠন করা হচ্ছে। এতে ফক্সের ৩৬ শতাংশ ও নিউজ করপোরেশনের ৩৩ শতাংশ শেয়ার রাখা হবে। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই ট্রাস্টের সম্ভাব্য মূল্য প্রায় ৩৩০ কোটি ডলার।
এর আগে নেভাদার একটি আদালতে পরিবারের মধ্যে উত্তরাধিকার নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। পরিবারের প্রধান ৯৪ বছর বয়সে এসে পারিবারিক ট্রাস্টের শর্তাবলি পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয় স্ত্রী আন্নার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর যে ট্রাস্ট গঠিত হয়েছিল, সেটিতে ফক্স ও নিউজ করপোরেশনের উল্লেখযোগ্য অংশীদারিত্ব রয়েছে।
মূল চুক্তি অনুযায়ী, মৃত্যুর পর ফক্স ও নিউজ করপোরেশনের ভোটিং শেয়ার চার জ্যেষ্ঠ সন্তানের মধ্যে সমানভাবে বণ্টনের কথা ছিল। তবে আশঙ্কা ছিল, বাকি তিন উত্তরাধিকার একজোট হয়ে বড় ছেলেকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারেন। বর্তমানে তিনিই ফক্সের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং নিউজ করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।