ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ তুলেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইউরোপের এ তিন শক্তি ‘বেপরোয়া’ কৌশল অনুসরণ করছে, যা বিশ্বমঞ্চে ইউরোপের অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তাঁর মতে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে এই তিন দেশের একতরফা অবস্থান কার্যত আন্তর্জাতিক আইন ও সমঝোতার পরিপন্থী। ইরানের অভিযোগ, ইউরোপের দেশগুলো এমন একটি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে, যা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে পারে। কিন্তু এ ধরনের উদ্যোগের কোনো আইনি ভিত্তি নেই এবং এটি ব্যর্থ হতেই বাধ্য।
২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ৩০ দিনের একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাদের অভিযোগ, ইরান চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন করেছে। তবে তেহরানের দাবি, প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম ওই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল এবং ইউরোপীয় শক্তিগুলো নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর ইউরোপীয় নেতারা তেহরানের সঙ্গে বাণিজ্য রক্ষার আশ্বাস দিলেও তা কখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বরং মার্কিন চাপের মুখে ইউরোপ তাদের ‘কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন’-এর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।
এর মধ্যে গত জুনে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালায়, যা ইসরায়েলের হামলার পরপরই সংঘটিত হয়। ওয়াশিংটন এখন ইউরোপীয় দেশগুলোর সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে।
ইরানের পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, আলোচনার দ্বার এখনও খোলা রয়েছে। দেশটি একটি বাস্তবসম্মত ও দীর্ঘস্থায়ী সমঝোতার জন্য প্রস্তুত, যেখানে কঠোর নজরদারি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পারমাণবিক কার্যক্রমের ওপর নিয়ন্ত্রণ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও দাবি করেছে, আলোচনার সুযোগ তাদের পক্ষ থেকেও উন্মুক্ত রয়েছে।