শিশুদের জ্বর হলে সাধারণত খেতে মন থাকে না। এই সময়ে মা-বাবা বা অভিভাবকরা নানা কৌশল অবলম্বন করেন, যেমন গল্প শোনানো বা খেলাধুলার মাধ্যমে খাওয়ানো। তবে জ্বরের কারণে শিশুর অরুচি বাড়ে, এবং জোর করে খাওয়ালে কখনো কখনো বমিও হয়ে যেতে পারে। ওষুধের প্রভাবে অনেক সময় মুখে তেতো স্বাদও তৈরি হয়। সব মিলিয়ে শিশুর খাওয়া অনেক কমে যায়।
জ্বরের সময় শিশুর শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। যদি এর সঙ্গে যুক্ত হয় খাওয়াদাওয়ার অনীহা বা বমি, শিশুর শারীরিক দুর্বলতা আরও বেড়ে যায়। তাই এই সময় শিশুকে সঠিকভাবে খাওয়ানো খুব জরুরি।
শিশুকে এমন খাবার দেওয়া উচিত যা সে খেতে পছন্দ করে এবং একসাথে পুষ্টিকরও। জ্বরের সময় তরল খাবার শিশুর জন্য সবচেয়ে উপকারী। শিশুকে বারবার দুধ, ভাতের মাড়, সবজি স্যুপ, জাউ, পাতলা খিচুড়ি ও ডালের পানি দেওয়া যেতে পারে।
অনেকে শিশুরা অসুস্থ হলে দুধ খেতে চায় না। এ ক্ষেত্রে মিল্কশেক বা পুডিং তৈরি করে ক্যালরি ও পুষ্টি যোগ করা সম্ভব। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন পেয়ারা, আমলকি বা কমলালেবু দেওয়াও ভালো। ফলের রস বা লেবুর শরবত শিশুরা সহজেই গ্রহণ করতে পারে।
মুরগির মাংস অনেক শিশুর প্রিয় খাবার। জ্বরের সময় মুরগি স্যুপ তৈরি করে খাওয়ানো যেতে পারে। ডিমের প্রোটিনও শিশুর দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে। সেদ্ধ ডিম খাওয়ানো শিশুর জন্য কার্যকর। জ্বরের সময় অনেক শিশু মাছ কম খেতে চায়, তাই মাছের টিকিয়া বা চপের মাধ্যমে শিশুর স্বাদ পরিবর্তন করে খাবার খাওয়ানো সম্ভব।
শরীরের খনিজ চাহিদা পূরণ করতে প্রতিদিন একবার ডাবের পানি দেওয়া যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত খাওয়ানো উচিত নয়। কুসুম গরম পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে। যদি শিশুর বমি বা ডায়রিয়া বেশি হয়, তবে বারবার ওরস্যালাইন খাওয়ানো গুরুত্বপূর্ণ।
খাবার একসঙ্গে বেশি না দিয়ে দুই ঘণ্টা অন্তর অন্তর অল্প অল্প করে খাওয়ানো উত্তম। শিশু যদি সম্পূর্ণ খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং দুর্বলতা বেশি দেখা দেয়, তাহলে তা বিপজ্জনক হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত শিশুর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।