আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে নিজেদের ৩৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জয়ের স্বাদ পেয়েছে মোজাম্বিক। গ্রুপ পর্বের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে তারা ৩–২ গোলে হারিয়েছে গ্যাবনকে। এই জয়ের মাধ্যমে আফকনে টানা ১৬ ম্যাচ জয়হীন থাকার বিব্রতকর অধ্যায়েরও অবসান ঘটাল দলটি, যাদের ডাকনাম ‘মাম্বাস’।
এই ঐতিহাসিক সাফল্যের ফলে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে ওঠার বাস্তব সুযোগ তৈরি হয়েছে মোজাম্বিকের সামনে। অন্যদিকে গ্রুপ ‘এফ’-এ গ্যাবনের জন্য এই হার বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ক্যামেরুনের বিপক্ষে পরাজিত হয়েছিল।
একই দিনে আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে আলজেরিয়া। বুরকিনা ফাসোর বিপক্ষে ১–০ গোলের জয় নিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয় উত্তর আফ্রিকার দলটি। পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোলটি করেন দলের অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড। এই জয়ের ফলে মিসর ও নাইজেরিয়ার পর তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে আলজেরিয়া।
তবে সুযোগ থাকলেও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আইভরি কোস্ট এখনো নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে পারেনি। মারাকেশে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তারা ক্যামেরুনের সঙ্গে ১–১ গোলে ড্র করে। ফলে শেষ ষোলো নিশ্চিত করতে তাদের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে ক্যাসাব্লাংকায় ইকুয়েটোরিয়াল গিনিকে ১–০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোতে ওঠার লড়াইয়ে ফেরে সুদান।
বুরকিনা ফাসোর বিপক্ষে আলজেরিয়ার ম্যাচে প্রথমার্ধের ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন দলের তারকা ফরোয়ার্ড। এটি চলতি আসরে তাঁর তৃতীয় গোল। এর আগে সুদানের বিপক্ষে ৩–০ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে তিনি করেছিলেন দুই গোল। ম্যাচের বাকি সময় আলজেরিয়া গোলের ব্যবধান ধরে রেখে জয় নিশ্চিত করে। ১৯৯০ ও ২০১৯ সালের শিরোপাজয়ীরা এ পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলেছে এবং দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে, পাশাপাশি এখনো কোনো গোল হজম করেনি।
এই ম্যাচে আলজেরিয়াকে সমর্থন দিতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ১৮ হাজার ৫২২ দর্শক। তাদের মধ্যেই ছিলেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার, যাঁর ছেলে বর্তমানে আলজেরিয়ার গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
ম্যাচ শেষে ম্যাচসেরা নির্বাচিত আলজেরিয়ার এক ফরোয়ার্ড বলেন, তারা একটি কঠিন ম্যাচেরই প্রত্যাশা করছিলেন। দলের সবাই দারুণ লড়াই করেছেন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জয় পাওয়া ও পরের পর্বে ওঠা, যা তাদের মূল লক্ষ্য ছিল।
একই গ্রুপে ইকুয়েটোরিয়াল গিনির বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে শেষ ষোলোতে যাওয়ার স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে সুদান। ম্যাচে প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোলে ১–০ ব্যবধানে জয় পায় দলটি। ১৯৭০ সালে একবার আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের শিরোপা জিতেছিল সুদান। এরপর ছয়বার অংশ নিয়ে ১৮ ম্যাচে এটি তাদের মাত্র দ্বিতীয় জয়। এই জয়ের পর দুই ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ তালিকার তিন নম্বরে অবস্থান করছে তারা। সমান ম্যাচ ও সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে দুইয়ে রয়েছে বুরকিনা ফাসো।
গ্রুপ ‘এফ’-এর আরেক ম্যাচে ৩৭ মিনিটে কর্নার থেকে হেডে গোল করে মোজাম্বিককে এগিয়ে দেন এক ফরোয়ার্ড। পাঁচ মিনিট পর পেনাল্টি থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আরেক খেলোয়াড়। যোগ করা সময়ে একটি গোল শোধ করে গ্যাবন ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয়। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে আরও একটি গোল করে ব্যবধান বাড়ায় মোজাম্বিক। জমে ওঠা লড়াইয়ে ৭৬ মিনিটে গ্যাবন আবার ব্যবধান কমালেও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলের হার এড়াতে পারেনি।
এই জয়ে মোজাম্বিক ইতিহাস গড়লেও গ্রুপে এখনো শীর্ষে রয়েছে আইভরি কোস্ট ও ক্যামেরুন। দুই ম্যাচ শেষে এই দুই দলের পয়েন্ট ৪। সমান ম্যাচে মোজাম্বিকের পয়েন্ট ৩। গ্রুপের তলানিতে থাকা গ্যাবন দুই ম্যাচ খেলেও এখনো জয়ের দেখা পায়নি।



