আইপিএলের মিনি নিলাম থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটে এসেছে এক উল্লেখযোগ্য সুখবর। ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে ফাস্ট বোলার মোস্তাফিজুর রহমানকে কিনেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। এ দাম বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় আইপিএলে কখনোই পাননি। এই খবর শুনে জাতীয় দলের অধিনায়ক বলেছেন, এমন খুশির মুহূর্তে তিনি মোস্তাফিজের কাছ থেকে ‘ট্রিট’ নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
গতকাল বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজন করা প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচে দেখা যায় জাতীয় দলের অধিনায়ক নেতৃত্বে ‘অপরাজেয়’ দল হার মানে ‘অদম্য’ দলের কাছে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলন বেশ আড্ডার মেজাজে সম্পন্ন হয়। এর আগে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত মিনি নিলামে চেন্নাই সুপার কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসকে ছাপিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স মোস্তাফিজকে দলে ভেড়ায়।
সংবাদ সম্মেলনে এই খবরটি জানানো হলে জাতীয় দলের অধিনায়ক বলেন, ‘খুবই খুশি হয়েছি। এটা মানুষের সামনে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা উচিত।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি রসিকতার সঙ্গে বলেন, ‘চেষ্টা করব ট্রিট নেওয়ার। তবে মনে হয়, করাবে না।’
মোস্তাফিজকে দলে নেওয়ার পর কলকাতা নাইট রাইডার্স এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে। সেখানে তিনি বলেন, ‘হাই কেকেআর ভক্তরা। আমি মোস্তাফিজুর রহমান। কেকেআরের অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত এবং খুশি। শিগগিরই দেখা হবে।’
নিলামে বাংলাদেশের আরেক পেসার নাহিদ রানাও অংশগ্রহণ করেছিলেন, তবে তার নাম কোনো দল পায়নি। নাহিদ জানান, ‘যখন আমরা ব্যাটিং করছিলাম, তখন খবরটি শুনে অনেক ভালো লাগছে।’ তিনি আরও বলেন, মোস্তাফিজকে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কেনা হয়েছে এবং নিজেও আইপিএলে খেলতে আগ্রহী।
জাতীয় দলের আরেক পেসার হাসান মাহমুদ মোস্তাফিজের আইপিএলে দল পাওয়া নিয়ে বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। একজন বর্তমান জাতীয় দলের খেলোয়াড় এত বড় অঙ্কে আইপিএলে খেলবেন, এটা দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো খবর।’ তিনি আরও বলেন, এটি অন্যান্য ক্রিকেটারদের জন্য প্রেরণার উৎস হবে। যারা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি অনুপ্রেরণা। হাসান উল্লেখ করেন, ‘আমাদের ক্রিকেটারদের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে যথেষ্ট সামর্থ্য আছে। সামনে আরও অনেক খেলোয়াড় সুযোগ পাবে।’
বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক একটি সামাজিক মাধ্যম পোস্টে লিখেছেন, ‘মোস্তাফিজ এবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলবে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে, যা বাংলাদেশের টাকায় ১২ কোটি ৩৭ লাখ। অভিনন্দন ফিজ। বর্তমান ফর্ম অনুযায়ী এটি স্বাভাবিক, বরং দারুণ কিছু করবে।’
সাবেক পেসারও সামাজিক মাধ্যমে মোস্তাফিজের এই রেকর্ডকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আইপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হওয়ায় দেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয় উষ্ণ হয়ে উঠেছে। অভিনন্দন।’
মোস্তাফিজের এই ইতিহাসসৃষ্ট মূল্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এ ধরনের অর্জন স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অংশগ্রহণের আকাঙ্ক্ষা জাগাচ্ছে। নিলাম প্রক্রিয়া এবং দামের উচ্চতা বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা এবং আনন্দের এক যৌথ মুহূর্ত উপহার দিয়েছে।



