যুক্তরাষ্ট্রের একটি আপিল আদালতের রায়ে নেপাল এবং মধ্য আমেরিকার দুই দেশ নিকারাগুয়া ও হন্ডুরাসের প্রায় ৬০ হাজার অভিবাসীর সুরক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এই রায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়ার পর অভিবাসন নীতি কঠোর করার যে নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতায় এসেছে। ট্রাম্পের এই আদেশের ফলে দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হয়, যার ফলস্বরূপ হাজার হাজার অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নেপাল, নিকারাগুয়া ও হন্ডুরাসের ৬০ হাজারেরও বেশি অভিবাসী আইনি সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতে একটি মামলা করেছিলেন। তারা দাবি করেছিলেন যে, মার্কিন অভিবাসন আইনে অস্থায়ী অভিবাসীদের যেসব অধিকার ও সুরক্ষার কথা বলা আছে, তাদের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হওয়া উচিত। তবে বুধবার আপিল আদালতের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, মামলার আবেদনকারী ৬০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীর ওপর অস্থায়ী অভিবাসীদের অধিকার ও সুরক্ষার বিধানগুলো প্রযোজ্য হবে না। এই রায়ের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ নেপালি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করেছে। নিকারাগুয়া এবং হন্ডুরাসের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ক্ষেত্রে এই বাতিল কার্যকর হবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলঘলিন আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এই সময়োপযোগী রায় যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থার অখণ্ডতা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে। এটি ‘আমেরিকাকে আবার মহান করে তোলো’ (Make America Great Again) স্লোগানের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন।”
অন্যদিকে, এই মামলার বাদীদের আইনি সহায়তা দেওয়া সংস্থা ইউসিএলএ সেন্টার অব ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ল’ পলিসির মুখপাত্র আহলিয়ান অরুলানানথাম আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, “আদালত এই রায় দিয়েছেন সরকারকে খুশি করার জন্য, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।” এই রায়টি অভিবাসী অধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি করেছে।