Monday, December 22, 2025
spot_img
Homeখেলার জগৎতিন মাসের নোটিশে বিপিএল আয়োজন চ্যালেঞ্জ

তিন মাসের নোটিশে বিপিএল আয়োজন চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএলের এবারের আসর আয়োজন করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড মাত্র তিন মাস আগে ঘোষণা দিয়ে। স্বল্প নোটিশে আয়োজনের কারণে দল গঠনে বড় ধরনের চাপে পড়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। বাস্তবতা হলো, দল গোছাতে তারা পাচ্ছে দুই মাসেরও কম সময়। এই সীমিত প্রস্তুতির প্রভাব পড়তে পারে টুর্নামেন্টের সামগ্রিক মানে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এবারও বিপিএলে মানহীন বিদেশি ক্রিকেটারের উপস্থিতি চোখে পড়তে পারে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ভাষ্য, এত অল্প সময়ে বিশ্বমানের বা বড় তারকা বিদেশি ক্রিকেটার দলে ভেড়ানো প্রায় অসম্ভব।

এবারের বিপিএলের সময়সূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের আরও দুটি বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে বিগ ব্যাশ লিগ এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হবে এসএ টি টোয়েন্টি। এই দুটি প্রতিযোগিতায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বেশির ভাগ ক্রিকেটার আগেই চুক্তিবদ্ধ। ফলে বিপিএলের জন্য তাদের পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। যদিও লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ এবার অনুষ্ঠিত না হওয়ায় শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি হয়েছিল। পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা নিয়মিতভাবেই বিপিএলে অংশ নিয়ে আসছেন। স্বাভাবিকভাবেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নজর ছিল এই দুই দেশের ক্রিকেটারদের দিকেই।

তবে সেই সম্ভাবনাতেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে হঠাৎ নির্ধারিত শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান টি টোয়েন্টি সিরিজ। তিন ম্যাচের এই সিরিজ শুরু হবে জানুয়ারির ৭ তারিখে ডাম্বুলায়। অন্যদিকে বিপিএল শুরু হচ্ছে ২৬ ডিসেম্বর সিলেটে। এই সূচির কারণে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান বোর্ড কেউই তাদের ক্রিকেটারদের দীর্ঘ সময়ের জন্য অনাপত্তিপত্র দিতে আগ্রহী নয়। সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের ছাড় দিতে রাজি দুই বোর্ড।

এর ফলে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ৪ জানুয়ারির পর আর বিপিএলে খেলতে পারবেন না। অর্থাৎ পুরো টুর্নামেন্টের জন্য এই দুই দেশের বড় তারকাদের পাওয়া কার্যত অসম্ভব। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এই দ্বিপাক্ষিক সিরিজকে দুই দেশের ক্রিকেটাররাই বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের চেয়ে জাতীয় দলের দায়িত্বই তাদের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে পারে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। বিপিএলে নতুন এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই একাধিক বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়তে হতে পারে। দলের হেড অব অপারেশনস জানিয়েছেন, হঠাৎ এই সিরিজ চূড়ান্ত হওয়ায় তাদের বিকল্প পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। তারা শুরু থেকেই এমন ক্রিকেটার বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, যাদের পুরো মৌসুম পাওয়া যাবে। কিন্তু পরিবর্তিত বাস্তবতায় দলগত সমন্বয় ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।

শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বাইরে বড় মানের বিদেশি ক্রিকেটারের বিকল্পও খুব বেশি নেই। আফগানিস্তানের প্রথম সারির বেশির ভাগ ক্রিকেটারও ব্যস্ত থাকবেন এসএ টি টোয়েন্টি ও বিগ ব্যাশে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে বিদেশি ক্রিকেটারদের আগ্রহ বরাবরই বিপিএলের চেয়ে অন্য দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের দিকে বেশি থাকে।

এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসে পারিশ্রমিক ও ব্যবস্থাপনার বিষয়টি। শুরু থেকেই বিপিএলে অর্থ পরিশোধ নিয়ে বিদেশি ক্রিকেটারদের অভিযোগ শোনা গেছে। যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দাবি, পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো ঘাটতি নেই এবং তারা যথাসময়ে অর্থ পরিশোধ করে থাকে। এক ফ্র্যাঞ্চাইজির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আইপিএল সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোই এসএ টি টোয়েন্টি বা আইএল টি টোয়েন্টির মতো লিগ পরিচালনা করে। সেখানে ভালো করলে আইপিএলে খেলার সুযোগ বাড়বে এমন প্রত্যাশা ক্রিকেটারদের মধ্যে কাজ করে। বিপিএলের ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে অনেক কিছু চূড়ান্ত হওয়ায় বিদেশি ক্রিকেটাররা আগেই অন্য লিগে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যান।

তবে আশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। বিপিএলের শেষ দিকে কয়েক ম্যাচের জন্য এক বা দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি তারকা বিদেশি ক্রিকেটার আনতে পারে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে এমন কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগও শুরু হয়েছে। সেই যোগাযোগ কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করছে সময় ও পরিস্থিতির ওপর। আপাতত যা চিত্র, তাতে এবারের বিপিএলেও উচ্চমানের বিদেশি ক্রিকেটারের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments