ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়কের ওপর হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। ঘটনাটিকে ঘিরে তদন্তে নতুন তথ্য উদঘাটনের আশায় এই রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টন থানার এক উপপরিদর্শক ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ড আবেদনটি দাখিল করেন। আদালতে আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং পরে রিমান্ড আবেদন করা হয়।
পুলিশের আবেদনে বলা হয়েছে, হত্যাচেষ্টার ঘটনায় একটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল, যেখানে হেলমেট পরিহিত দুজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ছিলেন। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে ওই রাজনৈতিক নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালান। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। ঘটনার পর র্যাব ২ এর ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের সূত্র পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে মোটরসাইকেলের মালিককে শনাক্ত করা হয়।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মোটরসাইকেলটির বিষয়ে সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এ কারণে তাঁকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করতে আসামিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি বলে পুলিশ মনে করছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, রিমান্ডের মাধ্যমে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও মোটরসাইকেল উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ, তাঁদের বর্তমান অবস্থান শনাক্ত এবং পুরো ঘটনার নেপথ্যের রহস্য উদঘাটন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্র কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এর সঙ্গে অর্থ বা অন্য কোনো সহায়তার যোগসূত্র আছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে। এসব তথ্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রেখে আসামিকে সাত দিন জিজ্ঞাসাবাদ একান্ত প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সূত্র ধরে শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আসামিকে আটক করে র্যাব ২। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মোটরসাইকেলটি নিজের মালিকানাধীন বলে স্বীকার করেন। পরে তাঁকে পল্টন মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং সেখান থেকে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুর ২টা ২৪ মিনিটের দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। ব্যাটারিচালিত একটি রিকশায় থাকা অবস্থায় পেছন থেকে অনুসরণ করে আসা মোটরসাইকেল আরোহীরা হামলা চালায়। মোটরসাইকেল থেকে একজন নেমে খুব কাছ থেকে তাঁর মাথায় গুলি করেন। ঘটনার পরপরই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তাঁর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে।



