রাজধানীর ফার্মগেটে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তেজগাঁও কলেজের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন, ফলে ওই এলাকার প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে থমকে যায় এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার সূত্রপাত তেজগাঁও কলেজের ছাত্রাবাসে সৃষ্ট সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে। পুলিশ জানায়, সংঘর্ষে আহত হওয়া শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার রাতে মারা যান। এ মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে কলেজের সামনে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। কিছু সময়ের মধ্যেই তারা ফার্মগেট মোড় পর্যন্ত এসে প্রধান সড়ক আটকে দেন, যা এলাকার স্বাভাবিক যান চলাচলে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের একজন উপকমিশনার বলেন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শান্ত রাখতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী现场ে উপস্থিত রয়েছে। তিনি জানান, কয়েক শ শিক্ষার্থী সড়কে অবস্থান নেওয়ায় রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং যানবাহন দীর্ঘ সারিতে আটকে পড়ে। এতে জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষসহ সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফার্মগেট থেকে কাওরান বাজার, বিজয় সরণি ও শান্তিনগরমুখী সড়কগুলোর যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। অফিস সময় হওয়ায় যানজট দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তীব্র ভিড়ের কারণে সেটিও কঠিন হয়ে পড়ে।
এদিকে, বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, ছাত্রাবাসে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের শাস্তির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাদের দাবি, হলের ভেতর নিরাপত্তা পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরেই নাজুক, যা প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবে আরও অবনতি হয়েছে।
পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত রাখতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা আরও বাড়তে থাকে, যা যান চলাচল পুনরায় চালু করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
ঘটনাস্থলে থাকা যাত্রীরা জানান, তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকলেও কোনো বিকল্প পথ ছিল না। অনেকে অফিস, জরুরি চিকিৎসা কিংবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে যেতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ফার্মগেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সড়ক অবরোধের কারণে পুরো রাজধানীতেই যানজটের চাপ বাড়তে থাকে। শহরের কেন্দ্রীয় সংযোগস্থল হওয়ায় এ এলাকার অচলাবস্থা ঢাকার অন্যান্য এলাকাতেও প্রভাব ফেলে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলমান ছিল এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।



