Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশকেশবপুরে বিদ্যুতের তারে আবার প্রাণহানি

কেশবপুরে বিদ্যুতের তারে আবার প্রাণহানি

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় বিদ্যুতের খোলা তারে জড়িয়ে আবারও একটি হনুমানের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের হাসপাতাল মোড়ে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় চলতি বছরে একইভাবে প্রাণ হারানো হনুমানের সংখ্যা দাঁড়াল চারটিতে। স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষা বিষয়ক মহলে এ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

কেশবপুর বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বর্তমানে প্রায় চার শতাধিক হনুমান বিচরণ করে। কিন্তু তাদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো অভয়ারণ্য বা নিরাপদ চলাচলের জায়গা নেই। ফলে প্রাকৃতিক প্রজননের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় বংশবৃদ্ধিতেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এসব হনুমান গাছ থেকে গাছে লাফিয়ে চলাচল করার সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুতের খোলা তারে স্পর্শ করে প্রাণ হারায়। আজ সকালে হাসপাতাল মোড় এলাকায় ঠিক এমন ঘটনাতেই একটি হনুমানের মৃত্যু হয়।

স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন স্থানে হনুমানদের খাদ্য দিয়ে থাকেন এক সমাজসেবী। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খাদ্য বিতরণের সময় জানতে পারেন, হাসপাতালের পাশে একটি হনুমান বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়েছে। পরে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রাণিসম্পদ অফিসে নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ সেটিকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে পৌরসভার ময়লাখানায় হনুমানটির দাফন সম্পন্ন হয়।

কেশবপুর বন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, দুই মাস আগে পাচারের সময় দুটি হনুমান উদ্ধার করে বিজিবি সেগুলো বন বিভাগে হস্তান্তর করেছিল। চিকিৎসা শেষে সেগুলোকে অন্যগুলোর সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হয়। উদ্ধার হওয়া সেই দুইটির একটি আজকের ঘটনায় মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, পাশাপাশি উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, জানান যে উপজেলা সদরের বিদ্যুতের খোলা তারগুলোতে কাভার লাগানোর দাবি তারা দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন। তাঁর মতে, তারগুলোতে সুরক্ষা না থাকায় হনুমানগুলো ক্রমাগত বিদ্যুতের আঘাতে মারা যাচ্ছে, যা বিরল প্রজাতি রক্ষায় বড় হুমকি। তিনি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

অভয়াশ্রয়ের অভাব, প্রজননের অনুকূল পরিবেশের সংকট এবং নিরাপদ চলাচলের পথ না থাকা—এসব কারণ মিলেই কেশবপুরে হনুমানদের জীবন আরও ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করছেন, বিদ্যুতের তারগুলো নিরাপদ করা এবং উপযুক্ত আবাসস্থল গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রত্যাশা করছেন সচেতন নাগরিকরা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments