যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দেয়া এক জমকালো নৈশভোজে গতকাল হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে বিশেষ অতিথিদের সমাগমে ছিল এক ব্যতিক্রমী পরিবেশ। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্সকে সম্মান জানাতে আয়োজিত এ ভোজে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী, টেসলার প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্বের প্রভাবশালী আরও অনেক ব্যবসায়ী। এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি নজর কাড়েন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড, যাকে অতিথিদের সামনের সারিতে বসানো হয়।
অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট এবং ক্রাউন প্রিন্স অতিথিদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা জানান। বক্তব্যের মাঝেই প্রেসিডেন্ট আলাদা করে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, তাঁর উনিশ বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে এই সুপারস্টারের পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে তিনি বেশ আনন্দিত। প্রেসিডেন্টের ভাষ্য অনুযায়ী, তাঁর ছেলে ছোটবেলা থেকেই ফরোয়ার্ডটির বড় ভক্ত এবং প্রিয় তারকাকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ পাওয়ায় সে ঘনিষ্ট যোগাযোগের এক বিশেষ মুহূর্ত উপভোগ করেছে।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাঁর ছেলে যেখানে এই খেলোয়াড় থাকেন, সেখানে যেতে চায় এবং আজকের সাক্ষাৎ তার জন্য বিশেষ এক অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। প্রেসিডেন্টের মতে, এই পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর ছেলে এখন বাবাকে একটু বেশি সম্মান করছে বলেও মনে হচ্ছে।
পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড এবং প্রেসিডেন্টকে ঘিরে এর আগেও নানা আলোচনার জন্ম হয়েছে। চলতি বছরের জুনে ফরোয়ার্ড নিজে স্বাক্ষর করা একটি জার্সি উপহার পাঠান প্রেসিডেন্টের কাছে। সেই উপহারটি পর্তুগালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট কানাডার আলবার্টায় এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে এক ব্রিটিশ সাংবাদিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে ফরোয়ার্ড বলেন, প্রেসিডেন্ট এমন একজন ব্যক্তি, যিনি বিশ্বে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে বা পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে এই সফরকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ সাংবাদিক হত্যার ঘটনার পর থেকে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সংঘটিত ওই হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়নে জানানো হয়েছিল, এই অপারেশন হয়তো ক্রাউন প্রিন্স অনুমোদন করেছিলেন। যদিও তিনি শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। এসব কারণে তাঁর সাম্প্রতিক সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
অনেক দিন পর পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডও যুক্তরাষ্ট্রে উপস্থিত হলেন। শেষবার তিনি এই দেশে ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৪ সালে। সামনে তাঁর আরও বড় স্বপ্ন অপেক্ষা করছে, কারণ আগামী বছর বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে তাঁকে আবারও যুক্তরাষ্ট্রে আসতে হবে। সেই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হবে ৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে, যেখানে প্রেসিডেন্টেরও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
২০২৬ বিশ্বকাপকে ঘিরে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত আগ্রহ এখন প্রায় উচ্ছ্বাসের পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিভিন্ন বক্তব্য ও মন্তব্যে তিনি বেশ স্পষ্টভাবে সেই আগ্রহের প্রকাশ ঘটিয়েছেন।



