Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeঅন্যান্যওয়াশিংটনের কৌশলগত ঘোষণা আলোচনায়

ওয়াশিংটনের কৌশলগত ঘোষণা আলোচনায়

ওয়াশিংটনে অতিথি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃত্ব সৌদি আরবকে ন্যাটোর বাইরে দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে। হোয়াইট হাউসে সৌদি যুবপ্রতিনিধির সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে উপস্থিত অতিথিদের সামনে এই ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

নৈশভোজে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট জানান, সৌদি আরবকে নন-ন্যাটো মেজর অ্যালাই হিসেবে মনোনীত করার মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক সহযোগিতা একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। তাঁর ভাষায়, এটি সৌদি আরবের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি পদক্ষেপ এবং যুক্তরাষ্ট্রও এই সহযোগিতার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে আগ্রহী।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে মাত্র ১৯টি দেশকে এই বিশেষ মর্যাদা দিয়ে থাকে। তাই সৌদি আরবের অন্তর্ভুক্তি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, এই ঘোষণা আগে গোপন রাখা হয়েছিল বিশেষ অনুরোধের কারণে, আর অতিথিরা অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো বিষয়টি শুনছেন।

শুধু বিশেষ মিত্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের ঘোষণা নয়, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পরিকল্পিত যে পরিষদ গঠিত হচ্ছে, তাতেও সৌদি যুবপ্রতিনিধির অংশগ্রহণের আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যুবপ্রতিনিধি ওই পরিষদের কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট নিজেই পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা সৌদি যুবপ্রতিনিধির সঙ্গে ওয়াশিংটনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। হোয়াইট হাউসে হওয়া এই বৈঠকে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়, পারমাণবিক সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ সম্প্রসারণ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার চেষ্টা এই আলোচনার অন্যতম লক্ষ্য বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

বৈঠক শেষে সৌদি যুবপ্রতিনিধি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ বর্তমানে প্রায় ৬০ হাজার কোটি ডলার হলেও তা বাড়িয়ে ১ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত করা হবে। এছাড়া অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয় নিয়েও আলোচনা এগিয়ে চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এটি সফল হলে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও জোরদার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দুই দেশের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দীর্ঘদিনের হলেও, সাম্প্রতিক কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলো এই অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বৈশ্বিক শক্তির পুনর্বিন্যাসের প্রেক্ষাপটে এই ঘোষণা উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব বহন করে। ওয়াশিংটন এবং রিয়াদের পারস্পরিক অবস্থান যে আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, বৈঠক ও ঘোষণাগুলো তাতে নতুন করে প্রমাণ দিল।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments