Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeখেলার জগৎশততম টেস্টে অনন্য অর্জনের গল্প

শততম টেস্টে অনন্য অর্জনের গল্প

দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে আজ এক বিশেষ দিন। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান তাঁর শততম টেস্ট ম্যাচে পা রাখায় ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে চলছে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছার বন্যা। দীর্ঘ দুই দশকের পথচলায় অনন্য এই মাইলফলক ছুঁয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। এই অর্জনে সরাসরি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়কও, যিনি ব্যাখ্যা করেছেন কেন এক শ টেস্ট খেলা যে কোনো ক্রিকেটারের জন্য বিরাট ঘটনা এবং ক্রিকেট–বিশ্বে বিশেষ গুরুত্ববহ।

২০০৫ সালের মে মাসে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল জাতীয় দলের এই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের। সেখান থেকে আজ মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে মাঠে নেমে ছুঁয়েছেন এক শ টেস্ট খেলার অনন্য উচ্চতা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শীর্ষ সংস্থার রিভিউ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘এটা সত্যিই এক অসাধারণ অর্জন। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো ক্রিকেটার এমন একটি স্বীকৃতি পেলেন।’

নিজে দেশের হয়ে ১৬৮ টেস্ট খেলেছেন সাবেক অজি অধিনায়ক। তাই দীর্ঘ ক্যারিয়ারের মূল্য তিনি বোঝেন গভীরভাবে। তাঁর মতে, একজন ক্রিকেটারের মান যাচাইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হলো কত দীর্ঘ সময় ধরে তিনি মাঠে পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারেন। তিনি বলেন, ‘আমি বরাবরই একটা বিষয় বলি—কারও ক্রিকেট–গুণমান যাচাই করতে গেলে তাঁর ক্যারিয়ারের স্থায়িত্ব এবং ধারাবাহিকতার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বছর পর বছর ধরে উচ্চমানের পারফরম্যান্স ধরে রাখা সহজ কাজ নয়, বরং সেটাই প্রকৃত দক্ষতার প্রতিফলন।’

দুই যুগের কাছাকাছি সময় ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলে চলেছেন বাংলাদেশের এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান। টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের মধ্যে একমাত্র তিনি দুইটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক, যা তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা ও মানসিক দৃঢ়তার এক অনন্য প্রমাণ। সাবেক অজি অধিনায়কের মতে, ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া, দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এবং ধারাবাহিকভাবে জায়গা ধরে রাখা—এসবই দীর্ঘ ক্যারিয়ারের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি ৭০, ৮০ বা ৯০ টেস্ট খেলে ফেলেন, তখন প্রতি বছরই নিজের ভেতরে পরিবর্তন আনা, নতুন দিক খুঁজে বের করা এবং আরও উন্নতি করা প্রয়োজন হয়। ক্যারিয়ারের শেষদিকে এসে এটা করা সবচেয়ে কঠিন হয়ে ওঠে। আর যে সেটা করতে পারে, তার অর্জন নিঃসন্দেহে বিশেষ।’

জাতীয় দলের এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে দু’বারের বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়ান সাবেক অধিনায়ক আরও বলেন, ‘তাঁর শততম ম্যাচ উপলক্ষে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আশা করি, এই টেস্টটি হবে তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতাগুলোর একটি।’

দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে আগে কেউ এই পর্যায়ে পৌঁছায়নি। তাই শুধু একটি সংখ্যাগত অর্জন নয়, এটি বাংলাদেশের ক্রিকেট–অগ্রগতিরও প্রতীক। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের প্রতিটি বাঁকে যেভাবে তিনি নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলেছেন এবং দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পারফরম্যান্সের মাধ্যমে—তা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার গল্প হয়েই থাকবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments