Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদনিউইয়র্কে ব্যক্তিগত আর্থিক সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিউইয়র্কে ব্যক্তিগত আর্থিক সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিউইয়র্কে প্রবাসী কমিউনিটির মাঝে আর্থিক জ্ঞান, পরিকল্পনা ও সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আয়োজিত হলো একটি “পার্সোনাল ফিনান্স” সেমিনার। ব্রঙ্কস অঞ্চলের এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুল হলরুমে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনটি ছিল বাংলাদেশি-আমেরিকান পেশাজীবীদের সংগঠনের উদ্যোগে, যেখানে প্রবাসী পরিবারের সদস্য, তরুণ পেশাজীবী ও নতুন উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য।

সেমিনারের উদ্বোধনী বক্তব্যে একজন সিপিএ পদবি–ধারী বক্তা ব্যক্তিগত আর্থিক পরিকল্পনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আর্থিক স্বাধীনতা শুধুমাত্র আয়ের ওপর নির্ভর করে না; বরং সচেতনভাবে আয় ব্যবস্থাপনা, সঞ্চয়ের অভ্যাস এবং শৃঙ্খলার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা গড়ে ওঠে। তিনি আরও জানান, অনেকেই আয় বৃদ্ধি পেলেই অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত মনে করেন, অথচ মূল বিষয় হলো সেই আয়কে কীভাবে ভাগ করে ব্যয় ও সঞ্চয় পরিচালনা করা হচ্ছে। এ সময় তিনি পারিবারিক বাজেট তৈরি, মাসিক ব্যয় পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়কে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট পদবি–ধারী একজন প্রতিনিধি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও হিসাব রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নিজের আয়, ব্যয় ও সঞ্চয়ের হিসাব নিয়মিতভাবে নথিবদ্ধ না করলে আর্থিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। দৈনন্দিন ব্যয়ের বাইরে জরুরি তহবিল গঠনকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি স্বল্পমেয়াদি আর্থিক লক্ষ্য যেমন জরুরি প্রয়োজন, শিক্ষা বা ভ্রমণ ব্যয়—তার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা যেমন অবসরকালীন সঞ্চয় বা স্থায়ী বিনিয়োগ—এসবকে আলাদা করে পরিকল্পনার ওপর জোর দেন।

সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন যে, প্রবাসে বসবাসের কারণে অনেক সময় হঠাৎ ব্যয়ের চাপ তৈরি হয়, যা মোকাবিলায় আর্থিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা অপরিহার্য। বিশেষ করে যারা পরিবারসহ প্রবাসে থাকেন, তাদের জন্য জীবনযাত্রার ব্যয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অনুমানহীন খরচের জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই প্রতিটি পরিবারের উচিত আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ নিয়মিত সঞ্চয় রাখা এবং ভবিষ্যতের স্থিতিশীলতার জন্য স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে আগ্রহী হওয়া।

সেমিনারের আলোচনায় পেশাজীবী ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের উদ্যোক্তারাও অংশ নেন। সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, আরও কয়েকজন দায়িত্বশীল সদস্য এবং কমিউনিটির অন্যান্য পদবি–ধারী ব্যক্তিরা উপস্থিত থেকে নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরেন। তারা বলেন, প্রবাসে আর্থিক সচেতনতা শুধুমাত্র ব্যক্তির স্থিতি নয়, বরং পুরো পরিবারের ভবিষ্যত নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত।

আলোচনায় উঠে আসে, অনেক পরিবারই আর্থিক পরিকল্পনার অভাবে অযাচিত ঋণ, হঠাৎ ব্যয় বা দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে সুনির্দিষ্ট বাজেট, ব্যয়ের অগ্রাধিকার নির্ধারণ, ক্রেডিট ব্যবহারে সতর্কতা এবং সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রযুক্তি–ভিত্তিক আর্থিক ব্যবস্থাপনার গুরুত্বও তুলে ধরেন, যা প্রবাসজীবনে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

সেমিনারের শেষ অংশে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং ব্যক্তিগত আর্থিক পরিকল্পনা নিয়ে দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতেও এমন সচেতনতা বাড়ানোর কার্যক্রম নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হবে, যাতে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আর্থিকভাবে আরও শক্তিশালী ও প্রস্তুত হতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments