যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমার একটি পৌর আদালত সম্প্রতি এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যেখানে নাগরিকরা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের জরিমানা নগদ অর্থের বদলে খাবার দানের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। এই পদক্ষেপটি শুধু ট্রাফিক জরিমানার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং কিছু নির্দিষ্ট পৌর জরিমানাতেও এই সুবিধা প্রযোজ্য।
স্থানীয় গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষও এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বই জমা না দেওয়ার কারণে প্রাপ্ত জরিমানা খাবার দানের মাধ্যমে আদায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে গ্রন্থাগারের নিয়ম অনুযায়ী, বই নষ্ট বা হারিয়ে গেলে এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না।
চিকাশা শহরের বাসিন্দারা নভেম্বর মাসের বাকি সময়ের মধ্যে ট্রাফিক ও অন্যান্য পৌর জরিমানা এই ‘খাবার দিয়ে জরিমানা পরিশোধ’ পদ্ধতিতে দিতে পারবেন। গ্রন্থাগারের বকেয়া জরিমানাও ডিসেম্বর মাসজুড়েই খাবার দান করে পরিশোধ করা যাবে।
এই কার্যক্রমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফুড ফর ফাইন প্রোগ্রাম’। এতে নাগরিকরা আংশিক বা পুরোপুরি জরিমানা খাবার দানের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবে। প্রতিটি অপচনশীল খাদ্যদ্রব্য জমা দিলে ১০ ডলার করে জরিমানা কমানো যাবে। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০০ ডলার পর্যন্ত এইভাবে জরিমানা হ্রাস করতে পারবেন।
পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যারা সময়মতো জরিমানা পরিশোধ করতে পারেননি এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, তারাও ভয় ছাড়াই এই প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারবেন। এছাড়া, ১০০ ডলারের বেশি জরিমানার ক্ষেত্রে বাকি পরিমাণ পরিশোধের জন্য নগর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
চিকাশা পৌর কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাগরিকরা খুব শিগগিরই এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। উল্লেখ্য, আদালত ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু রাখার কথা জানিয়েছে, তবে চিকাশা গণগ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ পুরো ডিসেম্বর মাস জুড়েও এই উদ্যোগ চালু রাখবে।
‘ফুড ফর ফাইন’ প্রকল্পে জমা হওয়া খাবারগুলো চিকাশা ইমার্জেন্সি ফুড প্যানট্রি-তে দান করা হবে। ফলে শুধুমাত্র জরিমানা মওকুফ হবে না, বরং কম বিত্তশালী মানুষদেরও খাদ্য সহায়তা পৌঁছাবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে নাগরিকরা নগদ অর্থের চাপ থেকে মুক্তি পাবেন এবং একই সাথে স্থানীয় সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখবেন। যুক্তরাষ্ট্রে চিকাশাই একমাত্র শহর নয়, যেখানে এই ধরনের উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। ইতিপূর্বে আরও কয়েকটি শহরেও ‘খাবারের মাধ্যমে জরিমানা পরিশোধ’ পদ্ধতি কার্যকর রয়েছে এবং কোথাও কোথাও এটি কয়েক বছর ধরে সফলভাবে চালু আছে।
নগর কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই অভিনব উদ্যোগ শহরের নাগরিকদের জন্য সহায়ক হবে এবং শহরের সামাজিক নিরাপত্তা ও মানুষের জীবনমান উন্নত করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে অপরিকল্পিত খাবারের অপচয়ও কমানো সম্ভব হবে।



