Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদনিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব ভবনের পথে নতুন অগ্রযাত্রা

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব ভবনের পথে নতুন অগ্রযাত্রা

অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব ভবন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পর সংগঠনটির বর্তমান কার্যকরী কমিটির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ সেন্টার’ নামে একটি স্থায়ী কেন্দ্র গঠনের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা কুইন্সের জ্যামাইকা অঞ্চলে অবস্থিত ব্যস্ততম স্থানে ভবন কেনার প্রাথমিক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৯-১০ হিলসাইডে অবস্থিত ভবনটি ৪ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে ক্রয়ের জন্য কন্ট্রাক্ট সাইন করা হয়। বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই ভবন ক্রয়ের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া (ক্লোজিং) সম্পন্ন হবে বলে তারা আশা করছেন।

এই ভবন প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বর্তমান কমিটির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ ছিল। বাংলাদেশ সোসাইটির সর্বশেষ নির্বাচনে আতাউর রহমান সেলিম এবং মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বাধীন প্যানেল জয়লাভের পর থেকেই তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভবন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। নির্বাচনের পর কমিটি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ভবন ক্রয়ের সম্ভাব্য স্থান অনুসন্ধান শুরু করে।

প্রক্রিয়াটি আরও সহজ হয় যখন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক শাহনেওয়াজ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভবন ক্রয়ের জন্য ২ লাখ ডলার অনুদানের ঘোষণা দেন, যার মধ্যে ইতোমধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার প্রদান করেছেন। বাকি ৭৫ হাজার ডলার এসেছে বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব ফান্ড থেকে।

চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী এবং কোষাধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম ভুইয়া রুমি। অনুষ্ঠানে কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম জানান, ভবনটির বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, “ভবনটির মাসিক মর্গেজ পরিশোধের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আপাতত এটি বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত হবে, তবে বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় স্পেস রাখা হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে পুরো মূল্য পরিশোধ করে ভবনটিকে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের করে নেওয়া। এরপর সেখানে বড় আকারের কমিউনিটি সেন্টার স্থাপন করা হবে, যেখানে একসাথে প্রায় এক হাজার মানুষ অনুষ্ঠান করতে পারবে। এছাড়া থাকবে বাংলা স্কুল, জিম এবং সংগঠনের প্রধান কার্যালয়।”

বর্তমানে এলমহার্স্টের হুইটনি অ্যাভিনিউতে থাকা সোসাইটির নিজস্ব ভবন বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ট্রাস্টি বোর্ড, কার্যকরী কমিটি এবং সাবেক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পরেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে ফান্ডরেইজিং কার্যক্রমের মাধ্যমে ভবনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।

ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ বলেন, “বাংলাদেশ সেন্টার প্রতিষ্ঠা একটি বিশাল প্রকল্প। এই প্রকল্প সফল করতে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিকে একসাথে এগিয়ে আসতে হবে।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “বাংলাদেশ সেন্টার হবে নিউইয়র্কের বুকে একখণ্ড বাংলাদেশ—যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐক্য, সংস্কৃতি ও গৌরবের প্রতীক হিসেবে দাঁড়াবে।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments