Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবিশেষ প্রতিবেদননিউইয়র্কের নতুন মেয়রের বিজয় মঞ্চে বাজল বলিউডের সুর

নিউইয়র্কের নতুন মেয়রের বিজয় মঞ্চে বাজল বলিউডের সুর

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ রাজনীতিক জোহরান মামদানি। বিজয় ভাষণের মঞ্চে তাঁর আচরণ, আবেগ, এমনকি পছন্দের গানেও প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর ভারতীয় শিকড়ের টান। বক্তব্য শেষ হওয়ার পর স্ত্রী ও বাবা-মাকে পাশে নিয়ে যখন তিনি সমর্থকদের অভিবাদন জানাচ্ছিলেন, তখন পটভূমিতে বাজছিল বলিউডের জনপ্রিয় গান ‘ধুম মাচালে’।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় মেয়র নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে প্রভাবশালী রাজনীতিক ও সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, যিনি মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনপুষ্ট প্রার্থী ছিলেন। এমন শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেন মামদানি। তাঁর এই জয়কে অনেকেই নিউইয়র্ক রাজনীতির এক নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখছেন।

ভোটের ফল ঘোষণার পর ব্রুকলিনে সমর্থকদের উদ্দেশে বিজয় ভাষণ দেন মামদানি। বক্তব্যে তিনি তাঁর প্রতি আস্থা রাখা সকল ভোটার ও কর্মীকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তিনি তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ ও প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। বক্তৃতার একপর্যায়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও কটাক্ষ করেন তিনি, যা শ্রোতাদের মধ্যে হাস্যরসের সঞ্চার ঘটায়।

বক্তব্য শেষ হওয়ার পর হাত নেড়ে সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মামদানি। কিছুক্ষণ পর মঞ্চে আসেন তাঁর স্ত্রী রমা দুওয়াজি, যিনি সিরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। ঠিক সেই মুহূর্তেই বাজতে শুরু করে বলিউডের বিখ্যাত গান ‘ধুম মাচালে’। মঞ্চজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। দর্শকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে, আর সেই আবেগঘন দৃশ্যটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়ে যায়।

এরপর একে একে মঞ্চে যোগ দেন মামদানির মা ও বাবা। তাঁর মা ভারতের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র নির্মাতা, আর বাবা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশিষ্ট অধ্যাপক। দুজনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যুক্ত আছেন।

মা-বাবা ও স্ত্রীকে পাশে নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবেগে ভেসে যান মামদানি। সেই সময়েও পটভূমিতে চলছিল ‘ধুম মাচালে’—যেন তাঁর বিজয়ের মুহূর্তটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলছিল সেই সুর। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক জয় নয়, বরং সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীকও।

উগান্ডার কাম্পালায় জন্ম নেওয়া মামদানি মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারসহ নিউইয়র্কে আসেন। ২০১৮ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন। রাজনীতিতে তিনি নতুন মুখ হলেও স্বল্প সময়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন তাঁর কাজ ও প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নিউইয়র্ককে আরও বাসযোগ্য করে তুলতে তাঁর অঙ্গীকার ইতোমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

জোহরান মামদানির এই জয় প্রমাণ করেছে—পরিশ্রম, সততা ও মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত সাফল্য এনে দেয়। তাঁর বিজয় মঞ্চের ‘ধুম মাচালে’ মুহূর্তটি কেবল এক গানের সুর নয়, বরং বহুসাংস্কৃতিক আমেরিকার এক অনন্য উদযাপন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments