এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগামী সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট সির সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই বৈঠকটি ঘিরে ছিল নানা জল্পনা।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জানান, ট্রাম্প শুক্রবার রাতে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন। এ সফরে তিনি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াও ভ্রমণ করবেন। সফরের শেষদিকে, আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (অ্যাপেক) সিইও সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার পর সির সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র মতে, দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাম্প ও সি চিন পিংয়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনায় মূলত চলমান বাণিজ্যসংক্রান্ত ইস্যুগুলোই প্রাধান্য পাবে বলে জানা গেছে। বৈঠক শেষে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবেন।
এ সফরের প্রথম ধাপেই ট্রাম্প মালয়েশিয়ায় অবস্থান করবেন। সেখানে তিনি রোববার দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। একই দিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের নেতাদের সঙ্গে এক নৈশভোজেও অংশ নেবেন তিনি। এর পরদিন, অর্থাৎ সোমবার, ট্রাম্প জাপানে পৌঁছাবেন।
জাপানে তিনি দেশটির নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তাকাইচির সঙ্গে মঙ্গলবার সাক্ষাৎ করবেন। দুই দেশের পারস্পরিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা নিয়েই মূলত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার ট্রাম্প যাবেন দক্ষিণ কোরিয়ায়, যেখানে তাঁর সফরের শেষাংশটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এছাড়াও অ্যাপেক সম্মেলনের অংশ হিসেবে সিইওদের মধ্যাহ্নভোজে বক্তব্য দেবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র–অ্যাপেক নেতাদের এক ভোজসভায় যোগ দেবেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চলতি মাসে চীন বিরল খনিজ সম্পদের রপ্তানিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে, যা দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধকে আরও তীব্র করে তোলে। চীনের এমন পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন দেশটির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি ও অন্যান্য পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেয়।
যদিও উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, ট্রাম্প সম্প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, ভবিষ্যতে চীনের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর এই সফরকেই সেই আলোচনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ বৈঠক শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কেই নয়, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।



