চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে এমন রাত খুব কমই আসে, যখন দর্শকরা গোল, উত্তেজনা এবং নাটক একসাথে উপভোগ করতে পারেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রাতের ম্যাচগুলোতে মোট ৪৩টি গোল, ৫টি লাল কার্ড এবং ৬টি পেনাল্টি (যার মধ্যে ৫টি সফল) ছিল। ফুটবলপ্রেমীরা এমন রাতকে বছরের সেরা মুহূর্তের মতো মনে রাখবেন।
মঙ্গলবার রাতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ ছিল পিএসজি বনাম লেভারকুসেন। এই ম্যাচে ৯টি গোলের জন্ম হয়, যেখানে পিএসজি জিতে যায় ৭–২ গোলে। দুই দলই একটি করে লাল কার্ড পেয়েছে, এবং লেভারকুসেনের একজন খেলোয়াড় পেনাল্টি থেকে গোল মিস করেন। নেদারল্যান্ডসের পিএসভি আইন্দহফেন শুরুতে পিছিয়ে গেলেও দারুণ খেলার মাধ্যমে ইতালির চ্যাম্পিয়ন নাপোলিকে ৬–২ গোলে হারিয়েছে।
ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলোর জন্যও এই রাত ছিল স্মরণীয়। আর্সেনাল, নিউক্যাসল এবং ম্যানচেস্টার সিটি সবাইই দাপুটে জয় পায়। বিশেষ করে সিটির ফরোয়ার্ড টানা ১২তম ম্যাচে গোল করে এক নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছেন। রাতের গোলবন্যার শুরুটা করেছে বার্সেলোনা, যা অলিম্পিয়াকোসকে ৬–১ গোলে পরাজিত করেছে।
লাল কার্ডের দিকেও রাতটি নাটকীয় ছিল। এই রাতের লাল কার্ডপ্রাপ্ত খেলোয়াড়রা হলেন: অলিম্পিয়াকোসের একজন, লেভারকুসেনের একজন, পিএসজির একজন, নাপোলির একজন এবং পাফোসের একজন। গোল, নাটক এবং উত্তেজনা মিলিয়ে এই রাতকে পরিসংখ্যানে বিশেষ স্থানে রাখা যায়।
গোলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই রাতে তৃতীয় সর্বোচ্চ গোল হয়েছে একক রাতের হিসেবে। এর আগে মাত্র দু’বার এক রাতে এত বেশি গোল হয়েছিল। গত মৌসুমে লিগ পর্বের শেষ রাউন্ডে ৬৪টি গোল হয়েছিল, তবে সেদিন ১৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ফলে গড়ে প্রতি ম্যাচে গোলের হার ছিল কম। ১৯৯৭ সালের ১ অক্টোবরেও ৪৪ গোল হয়েছিল ১২টি ম্যাচে।
মঙ্গলবার রাতে ৯টি ম্যাচে ৪৩টি গোল হয়েছে, অর্থাৎ প্রতি ম্যাচে গড়ে ৪.৭৮টি গোল। এমন গড় সংখ্যার জন্য রাতটি চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে দ্বিতীয় স্থানে। এর চেয়ে বেশি গড় গোলের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর, যখন ৮টি ম্যাচে ৪০টি গোল হয়েছিল।
গোলের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো এই রাতের শীর্ষে। সম্মিলিতভাবে তারা ৯টি গোল করেছে। ফ্রান্সের একমাত্র পিএসজি ক্লাবও ৭টি গোল করে অবদান রেখেছে। অন্যদিকে, বেলজিয়ামের ইউনিয়ন সাঁ-জিলোয়াঁ, পর্তুগালের বেনফিকা, কাজাখস্তানের কাইরাত এবং সাইপ্রাসের পাফোস কোনো গোল করতে পারেনি।
জাতীয়তার দিক থেকে স্প্যানিশ খেলোয়াড়রা শীর্ষে ছিলেন। স্প্যানিশরা সব মিলিয়ে ৬টি গোল করেছেন, এর মধ্যে বার্সেলোনার একজন খেলোয়াড় হ্যাটট্রিক করেছেন। ইংলিশ খেলোয়াড়রা ৫টি গোল করেছেন। এই খেলোয়াড়রা রাতের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছেন।
ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এই রাত ছিল গোল, রেকর্ড এবং নাটকের মিলনের এক অনন্য উদাহরণ। চ্যাম্পিয়নস লিগের উত্তেজনা এবং দুর্দান্ত খেলার এক অনবদ্য রাত মনে রাখার মতো হয়ে থাকবে।



