Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeআপনার স্বাস্থ্যবুকে ব্যথা ছাড়াই যে লক্ষণগুলো হতে পারে হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত

বুকে ব্যথা ছাড়াই যে লক্ষণগুলো হতে পারে হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত

হার্ট অ্যাটাক সবসময় বুকের তীব্র ব্যথার মাধ্যমে প্রকাশ পায় না। অনেক সময় শরীর এমন সংকেত দেয়, যা সহজে অবহেলা করা হয়, কিন্তু এগুলো হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিহ্ন হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কেউ খুব ক্লান্তি বা অবসন্নতা অনুভব করেন, তবে সেটি সাধারণ অবসাদ নয়, হার্ট অ্যাটাকের শুরুও হতে পারে। স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে গিয়ে হঠাৎ হাঁপিয়ে ওঠা বা শ্বাসকষ্ট অনুভূত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

অস্বাভাবিকভাবে ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম উপসর্গ। বিশেষ করে যদি হঠাৎ, অন্য কোনো কারণ ছাড়াই ঘাম আসে, তবে সেটিকে অবহেলা করা উচিত নয়। অনেক সময় পেটের ওপরের অংশে ব্যথা অনুভূত হয়, যা সাধারণভাবে গ্যাসের ব্যথা মনে করা হয়। তবে ব্যথা মাঝারি বা তীব্র মাত্রার হলে, গ্যাসের ওষুধেও কোনও স্বস্তি না পাওয়া গেলে হাসপাতালে যাওয়া প্রয়োজন। ব্যথা যদি তীব্র হয়, তবে সরাসরি চিকিৎসা নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

হার্ট অ্যাটাক কেবল বুকের ব্যথা নয়। অনেকের ক্ষেত্রে বাহু, কাঁধ, হাত, চোয়াল বা পিঠেও ব্যথা দেখা দিতে পারে। কিছু মানুষের মাথা হালকা বা ঘোরা-ঘোরির মতো অনুভূতিও হতে পারে। এই ধরনের উপসর্গগুলোর ক্ষেত্রে প্রথমে বুঝে নেওয়া জরুরি যে, এটি শুধু সাধারণ ক্লান্তি নয়, নাকি হার্টের সংকেত।

হার্টের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হলে সমস্যা আরও গভীর হয়। হৃৎপিণ্ড শরীরের রক্ত সরবরাহের প্রধান অঙ্গ হলেও, নিজের জন্যও রক্ত প্রয়োজন। হার্ট অ্যাটাকের সময় হৃদযন্ত্রের রক্ত সঞ্চালনের জন্য দায়ী ধমনী বা ধমনিগুলো বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে হৃৎপিণ্ডের ওই অংশ অক্সিজেনের অভাবে ভুগে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। চিকিৎসা না করলে ধীরে ধীরে ক্ষতি বৃদ্ধি পায়, হৃৎপিণ্ড আগের মতো কার্যকর থাকে না এবং অবশেষে বিকল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

হার্ট অ্যাটাকের প্রভাব শুধু হৃদযন্ত্রেই সীমিত থাকে না। রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে নেমে যেতে পারে, রোগী অচেতন হতে পারেন, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই উপসর্গগুলোর প্রতি অবহেলা করা উচিত নয়।

কিছু সতর্কতা অবশ্য প্রয়োজন। যেমন, হঠাৎ ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে, কিন্তু ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তের সুগার কমে যাওয়া) অনুভব করেন, তাতেও ঘাম আসতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে প্রথমে রক্তের সুগার পরীক্ষা করা জরুরি। যদি রক্তের সুগার কম থাকে, তবে চিনি মেশানো পানি খাওয়ানো যেতে পারে। তারপরও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ডায়াবেটিসের ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হতে পারে।

সংক্ষেপে বলা যায়, বুক ব্যথা না থাকলেও ক্লান্তি, হঠাৎ ঘাম, পেটের ওপরের ব্যথা, বাহু বা কাঁধে ব্যথা, মাথা হালকা লাগা ইত্যাদি হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাব্য উপসর্গ। এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা আবশ্যক। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে প্রাণ রক্ষা সম্ভব এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বজায় রাখা সম্ভব।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments