Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবিশেষ প্রতিবেদনগাজা উপত্যকায় সংঘাত বাড়লে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সতর্কবার্তা: হামাসকে শক্ত হাতে দমন করার...

গাজা উপত্যকায় সংঘাত বাড়লে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সতর্কবার্তা: হামাসকে শক্ত হাতে দমন করার হুঁশিয়ারি

মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান গতকাল একটি কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকায় যদি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি আবারও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না। এই ঘোষণা এসেছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র তিন দিনের মাথায়— যে চুক্তির মাধ্যমে গাজায় দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামাতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল।

রাষ্ট্রপ্রধানের ভাষায়, যদি ওই সংগঠনের সদস্যরা গাজায় নিরীহ মানুষের প্রাণনাশ অব্যাহত রাখে, তাহলে তাঁদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। তবে তিনি এটাও জানিয়েছেন যে, সম্ভাব্য অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেবে না; বরং আশপাশের মিত্রশক্তিগুলো তত্ত্বাবধানের আওতায় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন— প্রয়োজনে ইসরায়েলকে আবারও সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে।

প্রথম দিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার সময় মার্কিন নেতৃত্ব আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ের বাস্তবতায় দেখা যায়, গাজায় কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে পুনরায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। তারা পূর্বে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করা দলগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। এসব ঘটনাই নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং সেই প্রেক্ষাপটেই এসেছে এই কড়া হুঁশিয়ারি।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, যুদ্ধবিরতির পর নিহতদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে। এতে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সতর্কবার্তা পুরো অঞ্চলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।

রাষ্ট্রপ্রধান হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তৃতায় বলেন, “আমরা সরাসরি কিছু করব না, আমাদের করতে হবে না। আমাদের চারপাশে এমন কিছু শক্তি আছে, যারা খুব সহজেই এই কাজগুলো করে দিতে পারবে— তবে তারা আমাদের তত্ত্বাবধানে থাকবে।” তাঁর এই বক্তব্যকে অনেকে পরোক্ষভাবে ইসরায়েল বা আঞ্চলিক মিত্রদের প্রতি সমর্থনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি বজায় থাকলেও গাজার অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা এখনও স্থিতিশীল নয়। যদি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে, তাহলে পরিস্থিতি আবারও যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। রাষ্ট্রপ্রধানের সাম্প্রতিক মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে— তিনি চাইছেন গাজার শান্তি বজায় থাকুক, তবে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবেন না।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক মহল থেকে সতর্ক করা হয়েছে, এই মুহূর্তে অতিরিক্ত কঠোর বক্তব্য বা হুমকি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। তবে অন্যদিকে বলা হচ্ছে, চুক্তি রক্ষা ও নিরীহ মানুষের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন হলে বলপ্রয়োগ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে।

সব মিলিয়ে, যুদ্ধবিরতির তিন দিন পরেই এই সতর্কবার্তা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আবারও স্পষ্ট করল— গাজায় সহিংসতা বন্ধ না হলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো কতটা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে শান্তি স্থাপনে এগিয়ে যায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments