নিউইয়র্কে মানবাধিকারভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিউম্যান সাপোর্ট কর্পোরেশন আয়োজিত বছরের প্রথম বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সংস্থার ত্রয়োদশ বর্ষে পদার্পণের সময় এটি ছিল তাদের ২০তম ফ্রি ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম। ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু ভাইরাস প্রতিরোধে আয়োজিত এ উদ্যোগটি অনুষ্ঠিত হয় ১১ অক্টোবর জ্যাকসন হাইটস এলাকায়।
অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী এক সফল রিয়েল এস্টেট পেশাজীবী। তাঁর হাতেই প্রথম টিকা প্রদানের মাধ্যমে এ বছরের কর্মসূচির যাত্রা শুরু হয়।
এই উদ্যোগের স্পন্সর হিসেবে যুক্ত ছিল জনপ্রিয় ফার্মেসি চেইন ওয়ালগ্রীন ফার্মাসি, যাদের সার্বিক সহযোগিতায় কর্মসূচিটি সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে ফার্মাসি ম্যানেজার ও ফার্মাসিস্ট উপস্থিত থেকে অংশগ্রহণকারীদের টিকা প্রদান করেন। তাদের সঙ্গে সহযোগিতায় ছিলেন ফার্মেসি টেকনিশিয়ান হাসিনা আক্তার, যিনি প্রতি বছরের মতো এবারও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
উত্তর আমেরিকায় প্রতি বছর হাজারো মানুষ মৌসুমি ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখেই “মানুষ মানুষের জন্য” এই মূলমন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে হিউম্যান সাপোর্ট কর্পোরেশন ১৩ বছর ধরে টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে যাদের স্বাস্থ্যবীমা নেই, তাদের জন্য এই কর্মসূচি এক বড় সহায়তা হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি এটি কমিউনিটিতে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা নিজেদের সুরক্ষার পাশাপাশি অন্যদেরও টিকা নেওয়ার প্রতি উৎসাহিত করার আহ্বান জানান। কমিউনিটিতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিক, সমাজকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, পেশাজীবী এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে টিকাদান কার্যক্রমটি পরিণত হয় এক অনুপ্রেরণামূলক সামাজিক উদ্যোগে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তাদের উপস্থিতি কর্মসূচিকে আরও প্রাণবন্ত ও তাৎপর্যময় করে তোলে।
কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র মহিলা আওয়ামী লীগের এক সহ-সভাপতি, যিনি একই সঙ্গে হিউম্যান সাপোর্ট কর্পোরেশনের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া সংস্থার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ডাইরেক্টরবৃন্দও পুরো কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
আয়োজকবৃন্দ অংশগ্রহণকারী, অতিথি ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, কমিউনিটির কল্যাণে এ ধরনের জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তারা সকলকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আগামীতেও পাশে থাকার আহ্বান জানান।
সংস্থাটির প্রতিনিধিরা বিশ্বাস করেন, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগের বিকল্প নেই। তাদের এই টিকাদান কর্মসূচি সেই মানবিকতার প্রতিফলন, যা প্রমাণ করে—কমিউনিটির প্রতিটি মানুষের সুরক্ষাই তাদের মূল লক্ষ্য।



