ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য ক্রুজ ভ্রমণ এক স্বপ্নের মতো হলেও, সঠিক সময় না বাছাই করলে খরচ অনেক বেড়ে যেতে পারে। ক্রুজের টিকেট মূল্যের তারতম্য অনেক ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে—যেমন ক্রুজ লাইন, কেবিনের ধরন, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যাত্রার তারিখ। প্রধান ছুটির দিনে অথবা গরমের সময় সারা বিশ্বের ভ্রমণপিপাসুদের চাহিদা বেশি থাকায় দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়ে যায়।
যেখানে অনেকেই ভাবেন, শেষ মুহূর্তে বুক করলে সবচেয়ে সস্তা পাওয়া যাবে, বাস্তবে তা সবসময় সত্য নয়। ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, যদি আপনি সাশ্রয়ী ক্রুজে যেতে চান, তবে অফ-সিজন বা অফ-পিক সময়ই সবচেয়ে ভালো। সাধারণত স্কুল চলাকালীন সময়গুলো, যেমন সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে থ্যাঙ্কসগিভিং-এর আগে অথবা জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়, সস্তা ক্রুজের জন্য আদর্শ।
যাইহোক, গন্তব্যভেদে সময়ের চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আলাস্কা ক্রুজের মৌসুম এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ে ক্রুজের মূল ঝুঁকিপূর্ণ মাসগুলি হল জুন-জুলাই। এ সময় গেলে ভ্রমণ ব্যয় বেশি হলেও, প্রকৃতির দৃশ্যাবলী সবচেয়ে সুন্দর হয়। কিন্তু যদি সাশ্রয়ী ভ্রমণ চান, তবে মৌসুমের শুরু বা শেষের দিকে ভ্রমণ করতে পারেন, যদিও কিছু প্রাণী দেখার সুযোগ কম হতে পারে।
ইউরোপের ক্রুজের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। যদিও ইউরোপ technically সারা বছরই ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত, এপ্রিল-মে এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের সময়গুলো কম ব্যস্ত থাকে। এই সময়ে ক্রুজ ভাড়া কম থাকে এবং এয়ারফেয়ারও তুলনামূলকভাবে সস্তা। এছাড়া, এই সময়ের ভ্রমণে জাহাজ ও গন্তব্যস্থল কম ভিড় থাকে, যদিও কিছু ট্যুর ও কার্যক্রম সীমিত থাকতে পারে।
ভ্রমণের খরচ কমানোর আরেকটি কৌশল হলো, আগে থেকে বুক করা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এক থেকে দুই বছর আগে বুক করলে কেবল সাশ্রয়ই হয় না, আপনার পছন্দমত কেবিনও পাওয়া সহজ হয়। ক্রুজ লাইনগুলো সাধারণত বুকিং ফাইনাল পেমেন্টের আগে দাম কমালে সেই কম দামের সুবিধা দিয়ে থাকে।
ক্রুজের জন্য আরও সাশ্রয়ী সময় হলো ওয়েভ সিজন, যা সাধারণত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে। এই সময় বিভিন্ন ডিসকাউন্ট বা অনবোর্ড ক্রেডিটের মতো বোনাস অফার থাকে। ব্ল্যাক ফ্রাইডে-তে ক্রুজ লাইনগুলো সাধারণত সংযোজনমূলক সুবিধার উপর ছাড় দেয়, যেমন ড্রিংক প্যাকেজ বা শোর এক্সকারশন, কিন্তু মূল টিকেটের দাম তেমন পরিবর্তন হয় না।
সারসংক্ষেপে, সাশ্রয়ী ক্রুজ ভ্রমণের মূল রহস্য হলো—যাত্রা এবং বুকিংয়ের সময় ঠিকমত বেছে নেওয়া। অফ-পিক সময়ে যাত্রা করলে, প্রাক্-মৌসুমে ধীর গতিতে ভ্রমণ করলে, প্রতি সপ্তাহে ছুটি রাখলে এবং তরুণদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা নিশ্চিত করলে, খরচ কমিয়ে সুবিধাজনক ভ্রমণ করা সম্ভব। তবে বর্তমানে ক্রুজ লাইন, লিগ ও ফেডারেশনগুলোর সূচি এত জটিল, যে খেলোয়াড়দের মতো ভ্রমণকারীদেরও সময়মতো বিশ্রাম পাওয়া কঠিন।



