Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশশহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠ: সংহতি সমাবেশে বক্তাদের আবেদন জানালেন

শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠ: সংহতি সমাবেশে বক্তাদের আবেদন জানালেন

ফিলিস্তিনগামী ফ্রিডম ফ্লোটিলা থেকে আটক বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে ঢাকায় আয়োজিত সংহতি সমাবেশে বক্তারা বলেন, মানবতার কণ্ঠরোধের এই ঘটনার বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এমন একটি সময়ে যখন সারা বিশ্ব মানবাধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, তখন শহিদুল আলমের মতো মানবতাকর্মীর আটক হওয়া এক গভীর উদ্বেগের বিষয়।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে এই ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কূটনৈতিকভাবে শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। তারা জোর দিয়ে বলেন, একজন শিল্পী, আলোকচিত্রী ও মানবতার পক্ষের কণ্ঠকে নীরব করে রাখা মানে গোটা মানবতার প্রতি আঘাত।

গতকাল ঢাকার ইস্কাটন এলাকার বিয়ামের গলির মাঠে আয়োজিত এই সংহতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের এক সদস্য, যিনি একই সঙ্গে বাংলাদেশের একটি শ্রমিক সংগঠনের সভাপ্রধান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “শহিদুল আলম ও তাঁর সঙ্গে থাকা রুহি লোরেনসহ যারা ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন, তাঁদের আটক করা মানবতার কণ্ঠরোধের শামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে তাঁদের মুক্তি দাবি করছি।”

বক্তারা আরও বলেন, ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকারের আন্দোলনে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এক হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। শিল্পী, শ্রমিক, শিক্ষক, ছাত্র, সমাজকর্মী—সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বক্তারা বিশ্বাস প্রকাশ করেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠই বিশ্বজুড়ে এই অবিচার ও নিপীড়নের অবসান ঘটাতে পারে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা। তাঁরা বলেন, “আজ মানবতা বিপন্ন। যুদ্ধ, দমন ও নিপীড়নের এই সময়ে মানবতার পক্ষে যারা দাঁড়াচ্ছে, তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাতে এসেছি, কারণ শহিদুল আলমের মুক্তি মানে মানবতার মুক্তি।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক ও সমাজকর্মীরা। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সব সময় মানবতার পক্ষে, নিপীড়নের বিরুদ্ধে। তাই এই দেশের মানুষের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মহলে জোরালো অবস্থান নেওয়া উচিত।

সমাবেশ শেষে উপস্থিত কর্মীরা একটি প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে ইস্কাটন থেকে মগবাজার পর্যন্ত অবস্থান নেন। তাঁরা বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানের মাধ্যমে শহিদুল আলমের মুক্তির দাবি জানান এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

বক্তাদের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে শুধু একজন মানুষ নয়, একটি আদর্শকেও বন্দি করা হয়েছে। তারা বলেন, যে কণ্ঠ বারবার মানবতার পক্ষে, সত্যের পক্ষে কথা বলেছে, তাকে নীরব করা মানে মুক্তচিন্তার ওপর আঘাত। বক্তারা প্রত্যাশা করেন, আন্তর্জাতিক সমাজ দ্রুত এই অন্যায়ের প্রতিকার করবে এবং শহিদুল আলমকে মুক্ত করবে।

শেষে আয়োজকরা বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থে নয়, মানবতার পক্ষে কথা বলছি। একজন শহিদুল আলমের মুক্তি মানে হাজারো কণ্ঠের মুক্তি।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments