Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদরোহিঙ্গাদের জন্য নতুন সহায়তার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের

রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন সহায়তার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তায় যুক্ত হলো নতুন প্রতিশ্রুতি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত এ সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য একযোগে নতুন আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে। সর্বমোট ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই সহায়তার প্রতিশ্রুতি আসে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে।

গতকাল জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ নিয়ে আয়োজিত প্রথম উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে এ প্রতিশ্রুতির ঘোষণা দেওয়া হয়। সভায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রশ্নে রোহিঙ্গা ইস্যুকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

সহায়তার পরিমাণ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর যুক্তরাজ্য ঘোষণা করেছে ৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দুই দেশের এই নতুন প্রতিশ্রুতি রোহিঙ্গাদের জন্য ইতোমধ্যেই চলমান বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষত আশ্রয়, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় এই অর্থ ব্যবহার করা হতে পারে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই সমাধান কেবল তাদের নিজ দেশে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই সম্ভব। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপত্তা নিশ্চয়তার পাশাপাশি মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়টি এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যাবাসন কার্যক্রমকে কার্যকর ও বাস্তবায়নযোগ্য করতে হলে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়ন করা জরুরি। এ লক্ষ্যে তিনি সাত দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে ছিল রাখাইন অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, মিয়ানমারের ভেতরে মানবাধিকারের সুরক্ষা, আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধান, রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরদারিতে পরিচালনা।

সম্মেলনে উপস্থিত আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সংকটকে কেবল আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক মানবিক ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেন। তারা উল্লেখ করেন, এ ধরনের দীর্ঘস্থায়ী শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় কেবল আর্থিক সহায়তাই নয়, বরং রাজনৈতিক সদিচ্ছা, কূটনৈতিক চাপ ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

উল্লেখযোগ্য যে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তাদের খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসার জন্য প্রতিবছরই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। আন্তর্জাতিক সহায়তা এ খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও, সংকটের স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় প্রতি বছর এর বোঝা বাড়ছে।

নতুন এই সহায়তার ঘোষণা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আর্থিক সহায়তা যেমন জরুরি, তেমনি সমানভাবে জরুরি হলো রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করা। নতুবা এ সংকট থেকে মুক্তি মিলবে না।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments