Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeবিশেষ প্রতিবেদন৩৬ বছর পর দুই বোনের সন্ধান, এখনো অমীমাংসিত মায়ের হত্যার রহস্য

৩৬ বছর পর দুই বোনের সন্ধান, এখনো অমীমাংসিত মায়ের হত্যার রহস্য

ক্যালিফোর্নিয়ার দুই বোনকে হারিয়ে গিয়েছিল ঠিক ৩৬ বছর আগে। দীর্ঘ সময় নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে তাদের খুঁজে পাওয়া গেছে নিজেদের অঙ্গরাজ্যেই। আধুনিক প্রযুক্তি ও পারিবারিক ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এই রহস্যের সমাধান সম্ভব হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে তাদের মায়ের হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনো অমীমাংসিত অবস্থায় রয়ে গেছে।

গত আগস্টে যখন তাদের সন্ধান মেলে, তখন বোন দুটি নতুন নামে জীবনযাপন করছিলেন। শৈশবেই এক দম্পতির মাধ্যমে ফস্টার কেয়ারে বেড়ে ওঠেন তারা। ভেনচুরা কাউন্টিতে তাদের লালন-পালন করা হয় স্নেহময় পরিবেশে। অথচ এতদিন তারা নিজেরাই জানতেন না, ছোটবেলা থেকে নিখোঁজ শিশু হিসেবে তাদের নাম পুলিশের তালিকায় রয়ে গেছে।

ঘটনার সূত্রপাত ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। ক্যালিফোর্নিয়ার বেকার্সফিল্ডের এক নারীকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। আরিজোনার মোহাভে কাউন্টি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। শরীরজুড়ে ছিল একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন। পরে জানা যায়, ওই নারীই ছিলেন এই দুই বোনের মা।

মোহাভে কাউন্টি শেরিফ অফিসের তথ্যমতে, দুই বোনকে নিখোঁজ হওয়ার কয়েকদিন পর একটি পার্কের বাথরুমে ফেলে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে এক পথচারী শিশুদের কান্নার শব্দ শুনে সন্দেহ করেন এবং এক মহিলাকে ভেতরে গিয়ে দেখতে বলেন। তিনি গিয়ে দেখেন, ভেজা মেঝেতে পড়ে আছে দুটি ছোট্ট শিশু, পাশে কোনো অভিভাবক নেই।

তখন কেউ এই শিশুদের সাথে খুন হওয়া নারীর সম্পর্ক খুঁজে পায়নি। ফলে মেয়েদের পরিচয় অজানা রয়ে যায় এবং পরবর্তীতে একটি দম্পতি তাদের দত্তক নেন। সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন জীবনের অধ্যায়।

ঘটনার বহু বছর পর ২০১৯ সালে মোহাভে কাউন্টি শেরিফ অফিস পুরনো অমীমাংসিত মামলাগুলো পুনরায় তদন্তে নেয়ার উদ্যোগ নেয়। সেখানেই এই হত্যাকাণ্ডের ফাইল আবার খোলা হয়। তখনো মৃত নারীর সঠিক পরিচয় জানা যায়নি, মেয়েদেরকে নিখোঁজ হিসেবে ধরা হচ্ছিল, আর হত্যাকারীর কোনো সন্ধান মেলেনি।

২০২২ সালে মামলার অগ্রগতি ঘটে। নিহত নারীর আঙুলের ছাপ মিলে যায় মারিয়া অর্টিজ নামে এক নারীর পুরোনো গ্রেফতার রেকর্ডের সঙ্গে। জানা যায়, এটি ছিল ভুয়া পরিচয়। আসলে তিনি ছিলেন ওই নিহত মা। তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে যে, তার দুটি কন্যা সন্তান দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে।

ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে অবশেষে পরিবারের এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় বোনদের খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়। একজন বোন জানিয়েছেন, তারা ১৯৮৯ সালে ফেলে রাখা হয়েছিল। অপরজন আবার ছোটবেলার খবরের কাগজের কাটিং সংগ্রহ করে রেখেছিলেন, যেখানে তাদের পরিত্যক্ত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

যদিও মেয়েদের পুনর্মিলন ঘটেছে, তবে এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন অমীমাংসিত—কে হত্যা করেছিল তাদের মাকে? শেরিফ অফিস জানিয়েছে, এক সাক্ষী মাকে তার দুই মেয়ে এবং দুই অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষের সঙ্গে একটি কালো পিকআপ গাড়িতে দেখেছিলেন। পরে একই পার্কে দেখা যায় তাদেরকে, যেখানে শিশুদের ফেলে রাখা হয়েছিল।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা আশা করছেন, হয়তো এই তথ্য কারও স্মৃতিকে নাড়া দিতে পারে এবং খুনিদের খুঁজে বের করার সূত্র মিলবে। যে কেউ তথ্য জানলে শেরিফ অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments