Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeখেলার জগৎ১৪ ম্যাচের জয়রথে বায়ার্নের ইউরোপিয়ান ইতিহাস

১৪ ম্যাচের জয়রথে বায়ার্নের ইউরোপিয়ান ইতিহাস

জার্মান ফুটবলের জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখ তাদের দুর্দান্ত ফর্মের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে নতুন এক ইউরোপিয়ান রেকর্ড গড়েছে। জার্মান কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রতিপক্ষকে ৪-১ গোলে পরাজিত করে টুর্নামেন্টের শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিয়েছে তারা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে চলতি মৌসুমে টানা ১৪ ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে এক মৌসুমের শুরু থেকে সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড এখন বায়ার্নের দখলে।

দলের বর্তমান কোচের অধীনে বায়ার্ন এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৪টি ম্যাচ খেলেছে এবং প্রতিটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে। মৌসুমের সূচনা হয়েছিল গত ১৬ আগস্ট, জার্মান সুপার কাপে স্টুটগার্টের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ের মাধ্যমে। সেখান থেকেই শুরু হয় জয়রথ, যা এখনও থামেনি।

এই সময়ের মধ্যে বুন্দেসলিগায় তারা খেলেছে ৮ ম্যাচ, জার্মান কাপে ২ ম্যাচ এবং ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩ ম্যাচ। প্রতিটি প্রতিযোগিতায় জয় পেয়ে তারা প্রমাণ করেছে নিজেদের ধারাবাহিকতা ও আধিপত্য। বর্তমানে বুন্দেসলিগার পয়েন্ট তালিকায় বায়ার্ন শীর্ষে অবস্থান করছে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে। লিগে এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে তারা করেছে ৫১ গোল, বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ১০টি—যা তাদের রক্ষণভাগের দৃঢ়তা ও আক্রমণভাগের ধার দুই-ই তুলে ধরে।

এর আগে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে মৌসুমের শুরু থেকে টানা সর্বাধিক জয়ের রেকর্ডটি ছিল ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানের দখলে। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে বিখ্যাত ইতালিয়ান কোচের অধীনে মিলান টানা ১৩ ম্যাচ জিতেছিল। সেই মৌসুমে তারা সিরি আ এবং ইতালিয়ান সুপার কাপ জিতেছিল, যদিও চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে গিয়ে হেরে যায় ফরাসি ক্লাব মার্শেইয়ের কাছে। সেই ঐতিহাসিক রেকর্ডকেই এবার ছাড়িয়ে গেছে জার্মানির এই ক্লাব।

বায়ার্নের এই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন তাদের ইংল্যান্ডের তারকা স্ট্রাইকার। মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি ম্যাচে তিনি গোল পাননি। দুটি হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি ছয় ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন। এছাড়া সহখেলোয়াড়দের জন্যও তৈরি করেছেন তিনটি গোলের সুযোগ। সর্বশেষ ম্যাচে তিনি প্রতিটি অর্ধে একটি করে গোল করেন, দলের বাকি দুটি গোল আসে সতীর্থ লুইস দিয়াজ ও মাইকেল ওলিসের পা থেকে।

মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে এই স্ট্রাইকারের গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২-এ। তাঁর কাছাকাছি কেউই নেই। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা কলম্বিয়ান উইঙ্গার দিয়াজ, যিনি ১৪ ম্যাচে করেছেন ৮ গোল। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে দলের আক্রমণভাগে কতটা নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছেন ইংলিশ তারকা।

ম্যাচ শেষে বায়ার্নের কোচ বলেন, দলের এই তারকাকে এখন শুধু গোল করতেই দেখা যাচ্ছে না, বরং তিনি খেলার গতি ও সুযোগ তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কোচ হাসতে হাসতে যোগ করেন, “অনেক সময় বুঝতেই পারি না সে গোল করেছে কি না, কারণ সে মাঠে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে কাজ করে যে চোখ এড়িয়ে যায়। পরে শুনি, সে আবার দুই গোল করেছে!”

এই ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে বায়ার্ন শুধু জার্মান নয়, পুরো ইউরোপে এখন রেকর্ডের দৌড়ে শীর্ষে। প্রতিটি ম্যাচে তাদের আত্মবিশ্বাস ও একতা স্পষ্ট। যদি তারা এই ছন্দ বজায় রাখতে পারে, তবে ২০২৫-২৬ মৌসুম হতে পারে বায়ার্নের ইতিহাসে আরেকটি স্বর্ণালি অধ্যায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments