Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeএডুকেশনস্কুলগুলোতে এআই ব্যবহারের নীতিমালা গঠনে চলছে পরীক্ষানিরীক্ষা

স্কুলগুলোতে এআই ব্যবহারের নীতিমালা গঠনে চলছে পরীক্ষানিরীক্ষা

দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের নীতিমালা তৈরির কাজ এখন এক চলমান প্রক্রিয়া। শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ প্রযুক্তির বাড়তি আগ্রহ ও সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণে অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ দ্রুত নীতি নির্ধারণে এগিয়ে এসেছে। তবে এখনো বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা এআই ব্যবহারের বিষয়ে সুসংগঠিত নীতি প্রণয়নের ধাপে পৌঁছায়নি।

যেসব স্কুল জেলা ইতিমধ্যে নীতিমালা তৈরি করেছে, বিশেষজ্ঞদের মতে, সেগুলো সবসময় কার্যকর দিকনির্দেশনা দিতে পারছে না। কারণ, এআই একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি—যার ব্যবহার, সীমাবদ্ধতা এবং প্রভাব প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। ফলে নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হয়ে উঠেছে এক বড় চ্যালেঞ্জ।

শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন প্রশ্ন হলো—এই দ্রুত পরিবর্তনের সময় স্কুলগুলো কীভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য সঠিক নির্দেশনা দিতে পারে, আবার একই সঙ্গে নমনীয়তা বজায় রাখতে পারে? ইতিমধ্যে যেসব স্কুল জেলা এআই নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা থেকেও কিছু শিক্ষা পাওয়া যাচ্ছে—কী কাজ করছে, কী কাজ করছে না, এবং কী প্রয়োজন এখনো পূরণ হয়নি।

অনেক শিক্ষা প্রশাসক মনে করছেন, শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য নীতি তৈরি করলে চলবে না; বরং শিক্ষকদের, নির্দেশনাকারী কর্মীদের, প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানকারী দলকেও এই কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ, স্কুলে এআই ব্যবহারের ক্ষেত্র শুধু শিক্ষার্থীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—এটি পাঠদানের কৌশল, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এবং প্রশাসনিক কাজেও প্রভাব ফেলছে।

এআই নীতিমালা তৈরির অন্যতম বড় বাধা হলো এর দ্রুত অগ্রগতি। আজ যে প্রযুক্তি নতুন, কালই তা পুরোনো হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে—পরিস্থিতি অনুযায়ী নীতিমালা বদল করছে, বা পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যবহার যাচাই করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কার্যকর নীতিমালা তৈরি করতে হলে কিছু মৌলিক বিষয় নিশ্চিত করতে হবে—যেমন, তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ব্যবহারে নৈতিক মান বজায় রাখা এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ। অনেক স্কুল এখন এআই টুল ব্যবহারের আগে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যাতে তারা বুঝে নিতে পারেন কোন কাজে এআই ব্যবহার উপযোগী এবং কোথায় তা ঝুঁকিপূর্ণ।

শিক্ষা প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তার মতে, “এখন আর এআই-কে বাদ দিয়ে থাকা সম্ভব নয়। বরং এটাকে বাস্তবতা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং এর দায়িত্বশীল ব্যবহারের জন্য সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”

এখন পর্যন্ত যেসব স্কুল জেলা এআই নীতিমালা বাস্তবায়ন করেছে, তারা বলছে—এটি এক চলমান প্রক্রিয়া। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, আপডেট এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে নীতিমালাগুলো আরও কার্যকর করা সম্ভব।

শিক্ষা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এআই শিক্ষাব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে। তাই এখনই প্রয়োজন সুসংগঠিত, ভারসাম্যপূর্ণ ও ভবিষ্যত-নির্ভর নীতিমালা প্রণয়ন—যা শিক্ষার্থীদের শেখার সুযোগ বাড়াবে, শিক্ষককে সহায়তা করবে এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments