তাইওয়ান ও ফিলিপাইনে ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে সুপার টাইফুন ‘রাগাসা’। ঝড়ের আঘাতে তাইওয়ানের একটি হ্রদ উপচে পড়লে পানিতে ডুবে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়। একইসাথে ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলে প্রাণ হারিয়েছেন আরও একজন। ফলে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক মানুষ।
ঝড়টি মঙ্গলবার ফিলিপাইনের উত্তর উপকূল পেরিয়ে প্রবল বেগে আঘাত হানে তাইওয়ানে। বর্তমানে এটি চীনের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। এ কারণে হংকং কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ দুর্যোগ সতর্কতা জারি করেছে। সাধারণ মানুষকে ঘরের বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
টাইফুনের প্রভাবে হংকংয়ে পরিবহন ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। শত শত উড়োজাহাজের ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে, বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল–কলেজ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এমনকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
চীনের গুয়াংদং প্রদেশে ইতোমধ্যে প্রায় ১৮ লাখ ৯০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাগাসা চলতি বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। এর ফলে ভূমিধস ও ব্যাপক প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের ঝুহাই, শেনঝেন ও গুয়াংঝৌ শহর আজ দুপুর নাগাদ সাগরের পানিতে ডুবে যেতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। এদিকে ঝুহাই শহরে পুলিশ রাস্তায় টহল দিচ্ছে, মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
ঝড়টি সোমবার ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত দ্বীপগুলোতেও আঘাত হানে। সেখানে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বন্যার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে একজনের মৃত্যু হয়। কয়েকটি শহরে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, যা এখনও অব্যাহত আছে।
অন্যদিকে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলে ভারী বর্ষণে একটি বড় হ্রদ উপচে পড়ে ব্যাপক প্লাবন সৃষ্টি হয়। এতে প্রাণ হারান অন্তত ১৪ জন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এখনও অন্তত ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছে। তবে তাইওয়ানের ফায়ার সার্ভিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুধু হুয়ালিয়েন কাউন্টিতেই নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা ১২৪ জন।
প্রবল বাতাস, ভারী বৃষ্টিপাত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় তাইওয়ান, ফিলিপাইন ও চীনের দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে স্থানীয় প্রশাসন। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ থাকায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।