এক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারি শাটডাউনের মাঝেও দেশটির ন্যাশনাল পার্কগুলোতে ভ্রমণ কার্যক্রম প্রায় স্বাভাবিকভাবেই চলছে। ট্যুর অপারেটরদের মতে, অধিকাংশ পার্ক খোলা রয়েছে এবং পর্যটকরা নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ভ্রমণ সম্পন্ন করতে পারছেন।
উত্তর আমেরিকার ভ্রমণ পরিকল্পনায় যুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তাদের কোনো ভ্রমণসূচি পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়নি এবং ন্যাশনাল পার্কভিত্তিক সব ট্যুর স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রোডাক্ট ডিরেক্টর পদাধিকারী এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিছু পার্কের দায়িত্বে থাকা কনসেশন ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান এখনো পার্কের শৌচাগার ও জনসাধারণের ব্যবহারের স্থানগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করছে।
ইয়েলোস্টোন, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, ব্রাইস, জায়ন, ইয়োসেমাইট ও সিকোইয়া ন্যাশনাল পার্কগুলো স্বাভাবিক নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। একইভাবে, ইন্ট্রেপিড ট্রাভেল এবং গ্লোবাস ফ্যামিলি অব ব্র্যান্ডস জানিয়েছে, তাদের ট্যুর কার্যক্রমেও সরকারি শাটডাউনের কারণে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি।
ইন্ট্রেপিড ট্রাভেলের নর্থ আমেরিকার অপারেশন ডিরেক্টর এক পদাধিকারী জানান, ওয়াশিংটন ডিসির তাদের “আরবান অ্যাডভেঞ্চার” ডে ট্যুরগুলো বরং আগের তুলনায় বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। কারণ, সরকারি শাটডাউনের ফলে রাজধানীর অনেক জাদুঘর বন্ধ থাকায় পর্যটকরা বিকল্প হিসেবে এসব ট্যুরে অংশ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “যখন রেঞ্জার বা পার্ক প্রোগ্রাম কম থাকে, তখন ছোট দলের ভ্রমণই সেই ঘাটতি পূরণ করে এবং এটি ভ্রমণকারীদের জন্য এক অর্থবহ অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে।”
অন্যদিকে, ন্যাশনাল পার্কগুলোর আশেপাশের স্থানীয় পর্যটনকেন্দ্রিক শহরগুলোর পরিস্থিতি কিছুটা মিশ্র রূপ নিয়েছে।
ইউটাহ রাজ্যের অর্থনৈতিক সুযোগ অফিস জানিয়েছে, রাজ্যের পাঁচটি ন্যাশনাল পার্কের ভিজিটর সেন্টারগুলো খোলা রাখতে তাদের দপ্তর অর্থায়ন করছে। ফলে জায়ন ন্যাশনাল পার্কে পর্যটকের সংখ্যা কমেনি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পর্যটন কর্মকর্তারা।
তবে মন্টানার ভিজিট বিগ স্কাই সংস্থার মতে, তাদের এলাকায় ভ্রমণকারীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। যদিও সঠিক পরিসংখ্যান এখনও প্রকাশ করা হয়নি। সংস্থার এক নির্বাহী জানিয়েছেন, এটি সাধারণত পর্যটনের তুলনামূলক ধীর মৌসুম— যখন ইয়েলোস্টোনের গ্রীষ্মকালীন মৌসুম শেষের পথে এবং স্কি মৌসুম শুরু হয়নি। তবুও এবার স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পর্যটক হ্রাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা মূলত পার্কগুলো বন্ধ আছে এমন ধারণা থেকেই হতে পারে।
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, “ভাবুন, আপনি যদি প্যারিস ভ্রমণে যাচ্ছেন এবং জানতে পারেন আইফেল টাওয়ার বন্ধ— তখন আপনি হয়তো ভাববেন, ‘তাহলে যাওয়া ঠিক হবে কি না।’ ঠিক একই রকম মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবই এখন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণেও পড়ছে।”
সব মিলিয়ে, সরকারি শাটডাউনের প্রভাব থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ ন্যাশনাল পার্ক এখনো পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে এবং ট্যুর অপারেটররা বলছেন, নিরাপত্তা ও সুবিধার দিক থেকে ভ্রমণ প্রায় আগের মতোই নির্বিঘ্ন।



