Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশ‘সব কাজই হয়েছে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে’— বেবিচক চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যা

‘সব কাজই হয়েছে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে’— বেবিচক চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যা

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) প্রোটোকল অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। আগুন লাগার পরও সেই নিয়ম অনুযায়ীই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

আজ রাজধানীর উত্তরায় বেবিচক ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান বলেন, “বিমানবন্দরে নিয়মিতভাবে সপ্তাহে একদিন ফায়ার ড্রিল বা অগ্নিনির্বাপণ মহড়া পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই সম্পন্ন হয়।”

গত শনিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বেলা সোয়া দুইটার দিকে আগুন লাগার পর তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগে প্রায় ২৬ ঘণ্টা। এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও ব্যবসায়ীদের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৩০০ কোটি টাকার পণ্য ও কাঁচামাল পুড়ে যায়। অনেকের ধারণা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।

বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, আগুন লাগার পরও বিমানবন্দরের কার্গো অপারেশন বন্ধ রাখা হয়নি। “আমরা ৯ নম্বর গেট দিয়ে কার্গো কার্যক্রম চালিয়ে গেছি। এক দিনের জন্যও বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়নি,” বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত হয়েছে কোনো একটি আমদানি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে। “রানওয়ের অ্যাপ্রনে পণ্যসামগ্রী স্তূপ করে রাখার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে অসুবিধা হয়েছে,” বলেন চেয়ারম্যান। তিনি এই পরিস্থিতির জন্য বিমান, ঢাকা কাস্টম হাউস ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের দায়ী করেন। নিয়ম অনুযায়ী, পণ্য ২১ দিনের মধ্যে অপসারণ করার কথা থাকলেও বছরের পর বছর সেসব পণ্য সেখানেই পড়ে থাকে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে তদন্তের স্বার্থে কোনো পক্ষকে এখনই দায়ী করতে চান না বলেও জানান।

ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, “এটা সত্য নয়। আমি নিজে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। এমন কোনো অভিযোগ তারা করেননি। তবে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সটি বেবিচকের হলেও এর ভেতরের কার্যক্রম পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ঢাকা কাস্টম হাউস এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন বেবিচক চেয়ারম্যান। তাঁর মতে, “যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হলে বিমানবন্দরের ভাবমূর্তির কোনো ক্ষতি হবে না।”

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান আরও জানান, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে নতুন কার্গো ভবন বুঝে নেওয়ার প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আর্থিক বিষয়ে সমঝোতা না হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ অর্থ দাবি করছে, তার সঙ্গে প্রকৃত হিসাবের প্রায় হাজার কোটি টাকার পার্থক্য রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বেবিচক চেয়ারম্যানের বক্তব্য অনুযায়ী, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও কার্যক্রম সব সময়ই আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিচালিত হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি বিমানবন্দরের কার্যক্রমে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নতুন কিছু প্রশ্নও উত্থাপন করেছে—যার জবাব খুঁজতে এখন চলছে তদন্ত কার্যক্রম।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments