আজ ১০ সেপ্টেম্বর, বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের ১২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। ১৯২৩ সালের এই দিনে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সুকুমার রায় ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতার আবাস ময়মনসিংহ জেলার মসুয়ায়। পিতা ছিলেন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ ও যন্ত্রকুশলী, এবং পুত্র ছিলেন অস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার।
সাহিত্য রচনার পাশাপাশি সুকুমার রায় ফটোগ্রাফি ও প্রিন্টিং টেকনোলজিতেও পারদর্শী ছিলেন। উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি বিলেত যান এবং ম্যানচেস্টারের স্কুল অব টেকনোলজিতে ভর্তি হয়ে পিতার উদ্ভাবিত হাফটোন পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রমাণ করেন।
শান্তিনিকেতনে সময় কাটিয়ে তিনি রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথের সঙ্গে ‘গোড়ায় গলদ’ নাটকে অভিনয় করেন। স্বদেশি আন্দোলনের সময় বেশ কিছু গান রচনা ও সুরারোপ করেন। বাবার মৃত্যুর পর তিনি ‘সন্দেশ’ পত্রিকার সম্পাদনা ও পরিচালনার দায়িত্বও গ্রহণ করেন।
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্ম শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। কবিতা, নাটক, গল্প ও ছবি—সবক্ষেত্রেই তিনি সূক্ষ্ম ব্যঙ্গ ও কৌতুকের ছোঁয়া রেখেছেন। তিনিই বাংলায় ‘ননসেন্স রাইম’ বা ছড়ার প্রবক্তা। তার শিশুতোষ রচনায় হাস্যরসের পাশাপাশি সমাজচেতনাও প্রতিফলিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আবোল-তাবোল’, ‘হ-য-ব-র-ল’, ‘পাগলা দাশু’, ‘বহুরূপী’, ‘খাই খাই’, ‘অবাক জলপান’, ‘শব্দকল্পদ্রুম’ ও ‘ঝালাপালা’।
সুকুমার রায়ের অবদান বাংলা শিশুসাহিত্যে চিরস্মরণীয়, এবং তার সাহিত্য আজও পাঠক হৃদয়ে আনন্দ ও চিন্তার সঞ্চার করে চলেছে।