Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদশিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান, বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত প্রবাসী এক শিক্ষানুরাগী

শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান, বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত প্রবাসী এক শিক্ষানুরাগী

বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারে অসাধারণ ভূমিকার জন্য বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক শিক্ষানুরাগী। নিউইয়র্কে আয়োজিত সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে শিক্ষা ক্ষেত্রে তার দীর্ঘদিনের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

গত ২ নভেম্বর নিউইয়র্কের ট্যারেস অন দ্য পার্কে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সোসাইটির ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনের কর্মকর্তারা ও অতিথিরা তার হাতে সম্মাননা তুলে দেন।
তিনি বহু বছর ধরে প্রবাসে থেকেও নিজের জন্মভূমির উন্নয়ন ও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন, যা এখন অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে নতুন প্রজন্মের কাছে।

কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ধান্যদৌল গ্রামের এক শিক্ষক পরিবারের সন্তান এই শিক্ষানুরাগী প্রবাসী। প্রয়াত স্কুলশিক্ষক পিতার অনুপ্রেরণা ও মায়ের দিকনির্দেশনায় তিনি শিক্ষার প্রসারে নিজেকে নিবেদন করেছেন। সাত ভাইবোনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ এই প্রবাসী যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে ট্যাক্সি চালিয়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে দেশে গড়ে তুলেছেন আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ জাতীয় ও জেলা পর্যায়ের মেধা তালিকায় বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, নিজ এলাকায় সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সুবিধার জন্য একটি হাসপাতালও প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের প্রতিটি সঞ্চয় তিনি ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণে ও শিক্ষা বিস্তারে।

নিউইয়র্কে টানা ৩৫ বছর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি গড়ে তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসা— যা এখন শত শত শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ গড়ার জায়গা হয়ে উঠেছে। নিজের পড়াশোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ করতে না পারলেও, তিনি আজ হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন— যা একজন শিক্ষানুরাগীর জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন বলা যায়।

সম্মাননা প্রাপ্তির পর তিনি আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল। মা সবসময় সাহস দিয়েছেন— সেই অনুপ্রেরণায় আজ যা কিছু করতে পেরেছি, তা সবই দেশের মানুষের জন্য।”

এছাড়া অনুষ্ঠানে তিনি সংগঠনের নতুন ভবন ক্রয়ের কাজে সহায়তা হিসেবে পাঁচ হাজার ডলার অনুদান প্রদানের ঘোষণা দেন। আয়োজক সংস্থার কর্মকর্তারা তার এই মহতী উদ্যোগকে বাংলাদেশের প্রবাসী সমাজের জন্য এক অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেন।

প্রবাসের মাটিতে থেকে দেশের শিক্ষা বিস্তারে এমন আত্মত্যাগী মানুষ খুবই বিরল। আর এ কারণেই সমাজের বিভিন্ন স্তরে তিনি আজ “শিক্ষার দূত” হিসেবে পরিচিত। নিজের অর্জিত প্রতিটি সাফল্যের পেছনে তিনি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার মিশনকেই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখেন।

বাংলাদেশের এক গ্রামীণ শিক্ষক পরিবারের সন্তান হয়ে নিউইয়র্কের মতো শহরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে জন্মভূমিতে শিক্ষার বীজ বপন করেছেন— যা নিঃসন্দেহে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে থাকবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments