শিকাগোর লিটল ভিলেজ এলাকায় রোববার অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক মেক্সিকান স্বাধীনতা দিবসের প্যারেড। সবুজ-লাল পোশাকে সজ্জিত হাজারো মানুষ ছোট-বড় মেক্সিকান পতাকা হাতে নিয়ে অংশ নেন এ আয়োজনে। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর রঙিন ফ্লোট প্রদর্শন করা হয়। অশ্বারোহী, মার্চিং ব্যান্ড ও নৃত্যশিল্পীরা ২৬তম স্ট্রিটজুড়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
তবে এবারের প্যারেডে ভিড় আগের বছরের তুলনায় কম ছিল। অভিবাসন বিষয়ক অভিযানের কারণে অনেকে অংশ নিতে সাহস পাননি বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত এক নারী জানান, ভয় থাকা সত্ত্বেও তিনি পরিবারসহ প্যারেডে যোগ দিয়েছেন। তার মতে, শূন্য রাস্তায় উৎসবকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।
সম্প্রতি দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ ‘অপারেশন মিডওয়ে ব্লিটজ’ নামে অভিযান শুরু করেছে। এতে শিকাগোসহ ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এ উদ্যোগের সমালোচনা করে স্থানীয় ও অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা বলছেন, অপরাধের হার বরং কমেছে।
প্যারেডে অংশ নেওয়া অনেকেই অভিবাসন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানান। এর মধ্যে এক অভিবাসীর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত দাবি ওঠে। অপরদিকে, একজন শ্রমিক নেতার গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধেও স্লোগান শোনা যায়। আয়োজক কমিটির নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, অনুষ্ঠানে দ্রুত সাড়া দিতে আইনজীবীদের টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।
যদিও কিছু অনুষ্ঠান বাতিল হয়, রোববারের এই প্যারেড শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়। অনেক অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, ভয় থাকলেও ঐতিহ্য রক্ষা ও পরবর্তী প্রজন্মকে সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত রাখা জরুরি। শিশুদের হাতে পতাকা, ফ্লোটের উচ্ছ্বাস আর শিল্পীদের সৃজনশীল প্রদর্শনী পুরো পরিবেশকে উৎসবে ভরিয়ে তোলে।
স্থানীয় এক শিল্পী বলেন, কষ্টের সময়েও ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরতে হবে, কারণ এটাই তাদের শক্তি। অপরদিকে এক প্রবীণ মেক্সিকান-আমেরিকান জানালেন, তিনি জন্মসূত্রে নাগরিক হলেও ত্বকের রঙের কারণে যেকোনো সময় লক্ষ্যবস্তু হতে পারেন।
সবার অভিন্ন বক্তব্য—হুমকি ও ভয়ভীতি সত্ত্বেও নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি গর্ব অটুট থাকবে।