Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeইমিগ্রেশন তথ্যশিকাগোতে প্রতিবাদকারীদের দিকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের অভিযোগে কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

শিকাগোতে প্রতিবাদকারীদের দিকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের অভিযোগে কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

শিকাগোতে এক উচ্চপদস্থ সীমান্ত টহল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের দিকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার শহরের লিটল ভিলেজ এলাকায় অভিবাসনবিরোধী একটি প্রতিবাদের সময় ওই কর্মকর্তা সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় উপস্থিত ছিলেন, তবে মাথায় হেলমেট ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ভিড়ের দিকে একটি টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টার নিক্ষেপ করছেন। এ ঘটনায় আদালতের জারি করা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (TRO) লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে, যা সাংবাদিক বা প্রতিবাদকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস, পেপার স্প্রে বা এ ধরনের কোনো কৌশল ব্যবহার নিষিদ্ধ করে, যদি না তাৎক্ষণিক হুমকি তৈরি হয়।

অভিবাসন কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই কর্মকর্তা একটি “হিংস্র ও বৈরী ভিড়ের” হামলার মুখে পড়েছিলেন এবং তার মাথায় একটি পাথর আঘাত করে। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত বেশ কয়েকজন সাক্ষী এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এই ঘটনার পর শুক্রবার এক ফেডারেল বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার ওই কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে হাজির হতে হবে। আদালতের লিখিত আদেশে উল্লেখ করা হয়, “বিবাদীকে এই শুনানিতে সরাসরি হাজির করতে হবে।”

প্রসঙ্গত, এই কর্মকর্তা ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার আদেশে ছিলেন। মামলার বাদীপক্ষ আদালতে লিখেছে, “এই পদক্ষেপ আদালতের TRO-র একাধিক অনুচ্ছেদ সরাসরি লঙ্ঘন করেছে।” তাদের আবেদনের সঙ্গে ঘটনাটির ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র সংযুক্ত করা হয়।

অভিবাসন দপ্তর জানিয়েছে, কর্মকর্তার ওপর আক্রমণ শুরু হলে তিনি আত্মরক্ষার্থে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেন। তাদের বক্তব্যে বলা হয়েছে, ভিড় ক্রমশ “সহিংস ও আক্রমণাত্মক” হয়ে উঠেছিল এবং তারা কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে পাথর ও আতশবাজি ছুড়ছিল।

কর্তৃপক্ষের দাবি, “অফিসাররা বারবার সতর্ক করেছিলেন যে, পেছনে সরে না গেলে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হবে।” তবে ঘটনার ভিডিওতে দেখা গেছে, কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভিড়ের দিকে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়।

ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের এক সিনেট সদস্য, যিনি现场ে উপস্থিত ছিলেন, জানান, “মানুষ যখন নিরাপদ স্থানে পালানোর চেষ্টা করছিল, তখনও গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। কেউ নিজেদের পরিচয়ও দেয়নি। সবকিছু হঠাৎ করেই ঘটে।”

অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী দীর্ঘ ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, “ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, তাকে কেউ পাথর ছুড়েনি।”

আদালতের পূর্ববর্তী আদেশে বলা হয়েছিল, ফেডারেল অভিবাসন কর্মকর্তাদের যদি বডি ক্যামেরা থাকে, তবে তা পরিধান করতে হবে এবং চালু রাখতে হবে। তবে ঘটনার সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা অন্য কেউ বডি ক্যামেরা পরেছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত নয়।

উল্লেখ্য, ওই কর্মকর্তা বর্তমানে ফেডারেল কর্তৃপক্ষের একটি বিশেষ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার নাম দেওয়া হয়েছে “অপারেশন মিডওয়ে ব্লিটজ”। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এবং আইন প্রয়োগের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছেন।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যদি কেউ পেপার বলের আঘাত এড়াতে চায়, তাহলে প্রতিবাদে অংশ না নিলেই ভালো।” তার ভাষায়, “আমরা যতটা কম বলপ্রয়োগে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব, সেটাই করেছি।”

ঘটনাটি এখন আদালতে বিচারাধীন এবং দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments