Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeবিশেষ প্রতিবেদনলেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একই পরিবারের চার মার্কিন নাগরিক নিহত

লেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একই পরিবারের চার মার্কিন নাগরিক নিহত

গত রোববার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিন শিশুসহ চারজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন। লেবাননের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এই পরিবারটি স্থানীয় শহর বিনত জবেইলে অবস্থান করছিল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহর একজন অপারেটর। তবে হামলায় কয়েকজন নিরীহ বেসামরিক নাগরিকও প্রাণ হারিয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে হামলা চালিয়েছে এবং যে কোনো বেসামরিক ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে। হামলার বিস্তারিত ঘটনা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

লেবাননের পার্লামেন্ট স্পিকার নাবিহ বেরি জানান, নিহত পরিবারের মধ্যে ছিলেন এক বাবা এবং তাঁর তিন সন্তান। হামলায় আহত হয়েছেন শিশুগুলোর মা, যার অবস্থা আশঙ্কাজনক। লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসেফ রাজি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েলি ড্রোন দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা একটি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িতে আঘাত হানে। নিহত বাবা ও তাঁর তিন সন্তান ওই গাড়িতে ছিলেন। মোটরসাইকেল আরোহীও নিহত হয়েছেন, এবং ধারণা করা হচ্ছে তিনি হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম এই হামলাকে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই হামলা দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামবাসীকে ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বারবার ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এই হামলাকে ঘোর নিন্দার সঙ্গে উল্লেখ করেছে। তাদের বক্তব্য, ‘দক্ষিণ লেবাননে এক পরিবারের তিন শিশুকে হত্যার ঘটনা অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য। কোনো শিশুর জীবন দিয়ে সংঘাতের মূল্য চোকানো কখনোই উচিত নয়। প্রতিটি শিশুর সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করতে হবে।’

যদিও গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল, তারপরও ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই হামলার কারণে ভীত ও দুঃখিত।

এই ঘটনাটি শুধু লেবাননের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নয়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও শিশু সুরক্ষার বিষয়ক আলোচনা নতুন করে উস্কে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন হামলা দীর্ঘমেয়াদে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments