ফুটবলের জগতে বাবার স্বপ্নপূরণের পথে আরও এক ধাপ এগোলেন রোনালদোর ছেলে। বর্তমানে ১৪ বছর বয়সী রোনালদো জুনিয়রকে নিয়ে চলতি বছরের শুরুতে তার বাবা একটি স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন—“আমি চাই আমার ছেলের সঙ্গে খেলতে। তবে এটা তার নিজের দক্ষতার ওপরও নির্ভর করছে।”
রোনালদোর বয়স এখন ৪০, এবং যে ফিটনেস তিনি ধরে রেখেছেন তা তাকে আরও দুই-তিন বছর খেলার সুযোগ দিতে পারে। আর এই সময়ে যদি রোনালদো জুনিয়র জাতীয় দল বা ক্লাবের মূল দলে সুযোগ পায়, তাহলে এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত হিসেবে ফুটবলের ইতিহাসে লেখা হবে। বর্তমানে জুনিয়র আল নাসরের বয়সভিত্তিক দলে লেফট উইঙ্গার হিসেবে খেলছেন।
এই বছরের মে মাসে রোনালদো জুনিয়র পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৫ দলের জন্য ডাক পান এবং চার ম্যাচে গোল করতে সক্ষম হন। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে, তিনি পর্তুগালের অনূর্ধ্ব-১৬ দলে ডাক পেয়েছেন। তুরস্কে ফেডারেশন কাপের আগে গতকাল ২২ জনের দলে প্রধান কোচ জুনিয়রকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এই বয়সভিত্তিক জাতীয় দলভিত্তিক টুর্নামেন্টে জুনিয়র প্রথমবারের মতো অংশ নেবেন। টুর্নামেন্ট চলবে ৩০ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত। গ্রুপপর্বে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ তুরস্ক, ওয়েলস ও ইংল্যান্ড।
মে মাসে রোনালদো জুনিয়র ক্রোয়েশিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৫ দলের ডেভেলপমেন্ট টুর্নামেন্টের ফাইনালে দুই গোল করে শিরোপা জেতেন। সম্ভবত এই পারফরম্যান্সের কারণে খুব দ্রুত তাকে অনূর্ধ্ব-১৬ দলে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। জাতীয় দলে বাবা ও ছেলের স্বপ্নময় খেলা হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এই যাত্রা নিশ্চিতভাবেই সঠিক পথে এগোচ্ছে।
রোনালদো জুনিয়রের জন্য আগে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, স্পেন, কেপ ভার্দে এবং পর্তুগাল—সব জায়গায় খেলার সুযোগ ছিল। জন্মসূত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বয়সভিত্তিক দল বেছে নিতে পারতেন। এছাড়া বাবা যদি ইংল্যান্ডে ছিলেন, তাহলে কিছু আইনি প্রক্রিয়া সেরে সেখানে খেলার সুযোগও পেতে পারতেন।
রোনালদো জুনিয়র রিয়াল মাদ্রিদে থাকার সময় অন্তত ৮ বছর বয়স পর্যন্ত বাবার সঙ্গে ছিলেন। অনূর্ধ্ব-১০ বয়সে তিন বছরের বেশি স্পেনে থাকা খেলোয়াড় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারে, কিন্তু পরিবারের সিদ্ধান্ত ছিল সে পথে যাওয়া নয়। কেপ ভার্দে নানাবাড়ির সুবাদে সেখানে খেলার সুযোগও ছিল, যা ২০২৬ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করত। তবু শেষ পর্যন্ত রোনালদো জুনিয়র তার বাবার দেশ পর্তুগালকেই বেছে নিলেন।
এই ঘটনা স্পষ্ট করে দেখাচ্ছে, কিভাবে পর্তুগাল জাতীয় দলে নতুন প্রজন্মের উদীয়মান তারকাদের বিকাশ ঘটছে। রোনালদো জুনিয়রের দ্রুত অগ্রগতি এবং জাতীয় দলের ডাক অবশ্যই ফুটবলপ্রেমীদের জন্য আনন্দের খবর। এমন উদ্যোগ শুধু ব্যক্তিগত স্বপ্ন নয়, এটি ভবিষ্যতের ফুটবল তারকার পথও সুগম করছে।
রোনালদোর সঙ্গে এই যাত্রা এখন শুধু খেলাধুলার সীমা ছাড়িয়ে একটি পরিবারিক গল্পে রূপ নিয়েছে। বাবা ও ছেলের মধ্যে এই অনন্য সম্পর্ক ফুটবলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যোগ করতে যাচ্ছে।



