রাজধানীর সব গির্জা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তধর্মীয় ঐক্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। ধর্মীয় সহাবস্থানে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করা হলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রেস উইং থেকে আরও জানানো হয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীতে ঘটে যাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার পর একজন ২৮ বছর বয়সী যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ওই যুবককে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তিনি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠনের সদস্য ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে কাকরাইলের সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল চার্চ এবং সেন্ট যোসেফ স্কুল প্রাঙ্গণে সংঘটিত ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, রাজধানীতে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে ডিএমপি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। শহরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের শনাক্তে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আজ সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণের একাধিক ঘটনা ঘটে। ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের মাইডাস সেন্টারের সামনে, ৯/এ সড়কে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে, এবং মিরপুরে ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। একইভাবে, সকাল সাতটার দিকে মোহাম্মদপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা-এর সামনের সড়ক ও অভ্যন্তরে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।
এর আগে ৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে রমনা এলাকায় অবস্থিত সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল চার্চ লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। একই রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতরেও বিস্ফোরণ ঘটে।
এই ধারাবাহিক হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় টহল ও নজরদারি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর সব গির্জা, মন্দির, মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে।
নাগরিকদের আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে, এবং যে কোনো সন্দেহজনক কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। রাজধানীর সর্বত্র এখন কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।



