Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশরাকসু নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা, ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নিয়েছে দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীরা

রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা, ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নিয়েছে দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আমেজ এখন শুধু ক্যাম্পাসেই সীমাবদ্ধ নয়, ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকাগুলোতেও। নির্বাচনের এই উত্তাপ ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিনোদপুর, কাজলা, চারুকলা, হরিজনপল্লী এবং মেহেরচণ্ডী এলাকায় দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।

বুধবার থেকেই বিনোদপুর এলাকায় দুই দলের নেতাকর্মীরা আলাদা আলাদা শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমায়েতের আকারও বাড়তে থাকে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্তও তাঁরা সেখানে অবস্থান করছেন। কেউ বসে আছেন, কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আবার কেউবা খাওয়াদাওয়ায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকের কাছে রাস্তার একপাশে একদল কর্মী লম্বা শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। অপর পাশে অন্য দলের নেতা–কর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে তাঁদের কিছু সদস্যকে মোটরসাইকেলযোগে এলাকায় টহল দিতে দেখা যায়। যদিও দুই পক্ষের কেউই কোনো সংঘাতমূলক আচরণে জড়াননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকের হরিজনপল্লী এলাকায় অবস্থানরত এক শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জানান, তাঁরা মূলত রাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা। দীর্ঘদিন পর ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তাই তাঁরা এই “ভোট উৎসব” উপভোগ করতেই উপস্থিত হয়েছেন।

অন্যদিকে, বিনোদপুরে অবস্থান নেওয়া এক রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর দেশে কোনো ভোট হয়নি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন দশক পরে। আমরা এই ঐতিহাসিক নির্বাচনকে ঘিরেই এখানে আছি, কোনো ধরনের গোলযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নয়।”

আরেক দলীয় নেতা জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সক্রিয় উপস্থিতির কারণে তাঁদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তাঁদের ভাষায়, “আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি সজাগ থাকার জন্য, যাতে কেউ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারে।”

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘অস্ত্র বিতরণের’ অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ে। এক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের বিপরীতে প্রকাশ্যে অস্ত্র বিতরণ চলছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে অন্যরকম চিত্র পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের বেতার মাঠসংলগ্ন এলাকায় দেখা যায়, কিছু লোক ছোট ছোট দলে বসে আছেন, পেছনে একটি শামিয়ানা দেওয়া। সেখানে চলছে দুপুরের খাবারের আয়োজন। আলাপ করে জানা যায়, তাঁরা স্থানীয় কর্মী, রাকসু নির্বাচন উপলক্ষে একত্র হয়েছেন এবং নিজেদের মধ্যে খাবার ভাগাভাগি করছেন।

সেখানে উপস্থিত একজন স্থানীয় কর্মী বলেন, “রাকসু নির্বাচন হচ্ছে, তাই আমরা একত্র হয়েছি। এখানে শুধু খাওয়াদাওয়া চলছে, কোনো অস্ত্রের প্রশ্নই আসে না।”

নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে উত্তেজনা ও উপস্থিত জনসমাগম। যদিও উভয় পক্ষই বলছে, তাঁদের উদ্দেশ্য নির্বাচনী পরিবেশ উপভোগ করা, তবুও প্রশাসন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের সতর্কতা কাজ করছে। রাকসু নির্বাচন দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে—তাই এর গুরুত্ব, উত্তেজনা ও প্রতীক্ষা এখন রাজশাহীর আকাশ-বাতাসে স্পষ্ট।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments