Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশরংপুরে বিদ্যালয়ে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ, ক্ষোভে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা

রংপুরে বিদ্যালয়ে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ, ক্ষোভে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা

রংপুর শহরের হারাটি উচ্চবিদ্যালয়ে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) নগর কমিটির এক নেতা শ্রেণিকক্ষে ঢুকে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটান। এই ঘটনার পর অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর। অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ওই নেতা বিদ্যালয়ে গিয়ে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এরপর তিনি একে একে তিনটি শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, তিনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে বেত দিয়ে মারধর করেন। এতে মেয়েশিক্ষার্থীরাও রেহাই পাননি। এমনকি নবম শ্রেণিকক্ষে মারতে গিয়ে বেত ভেঙে যায়। কয়েকজন শিক্ষার্থী এতটাই আহত হয় যে তাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। এক শিক্ষার্থীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই দিন ভর্তি রাখতে হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, এ বছরের শুরুতে বই সরবরাহে দেরি হওয়া এবং নতুন সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের কারণে পরীক্ষায় অনেকেই অকৃতকার্য হয়েছিল। কিন্তু এসব কারণ না শুনেই ওই নেতা গরু পেটানোর মতো শিক্ষার্থীদের পেটান।

ঘটনার পর ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে ছুটে যান এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে জবাব চান। একজন অভিভাবক স্থানীয় থানায় জিডি করেন। পুলিশও ঘটনাস্থলে গিয়েছিল বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত নেতা দাবি করেন, তিনি বিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ভালো করার জন্য শাসন করেছেন, তবে ঘটনাটি অতিরঞ্জিত করে প্রচার করা হয়েছে। তাঁর দাবি অনুযায়ী, বিষয়টি পরে মীমাংসা করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষকও একই সুরে বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে ঘটনাটি মীমাংসা হয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, শিক্ষার্থীদের এভাবে শারীরিকভাবে শাসন করা সম্ভব নয়।

এদিকে, স্থানীয়দের মতে, এটি কোনো শাসন নয়, বরং শিক্ষার্থী নির্যাতন এবং ফৌজদারি অপরাধ। তাঁদের দাবি, প্রধান শিক্ষক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গোপন করেছেন।

রংপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতনের কোনো নিয়ম নেই, এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। তবে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের স্বার্থে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments