এক সময় বাড়ি মালিকানা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্বপ্নের অঙ্গ। ছোটবেলায় অনেকেই স্বপ্ন দেখতেন নিজস্ব একটি বাড়ি, যেখানে পরিবারসহ সুখী জীবন কাটানো সম্ভব হবে। অনেক পরিবারের জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে এই স্বপ্ন পূরণ হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, এই স্বপ্নের পথটি তরুণ প্রজন্মের জন্য ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে।
একটি ২০২৪ সালের জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৬৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, বাড়ি কেনা এখন প্রায় অসম্ভব। প্রথমবারের জন্য বাড়ি কেনার সংখ্যা ২০২৩ সালে বাজারের ৩২ শতাংশ থেকে ২০২৪ সালে কমে ২৪ শতাংশে নেমেছে, যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন।
দীর্ঘ ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা একজন রিয়েল এস্টেট আইনজীবীর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, বহু মানুষকে বাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করা সম্ভব। প্রথম বাড়ির চাবি হাতে পেলে তরুণ বা পরিবারের মুখে যে আনন্দ দেখা যায়, তা অভিজ্ঞতার অন্যতম আনন্দদায়ক অংশ।
যদিও বাড়ি মালিকানা পুনরুদ্ধার একটি রাতারাতি সম্ভব নয়, তবে সরকার কিছু কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে পারে যা বিশেষ করে তরুণদের জন্য বাড়ি কেনার পথ সুগম করবে।
প্রথমত, একক পরিবারের জন্য নির্ধারিত জোনিং নীতি রক্ষা করা জরুরি। এটি আশেপাশের আবাসিক এলাকার সুরক্ষা এবং সাবার্বের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের সুযোগ নিশ্চিত করে। শহরকে সাবার্বে অনির্দিষ্টভাবে আনা সবসময় কার্যকর সমাধান নয়; স্থানীয় সম্প্রদায়ের নিজস্ব পরিকল্পনাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
দ্বিতীয়ত, তরুণদের জন্য করমুক্ত হোমবায়ার বিনিয়োগ অ্যাকাউন্ট চালু করা যেতে পারে। কলেজ বা অবসরভাতা সংরক্ষণের মতোই, প্রথম বাড়ির জন্য সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই এই ধরনের অ্যাকাউন্ট আছে, তবে একটি জাতীয় স্তরের করমুক্ত বিকল্প তরুণদের জন্য আরও কার্যকর হতে পারে।
তৃতীয়ত, প্রধান আবাসনের ওপর মূলধন লাভের কর (capital gains tax) বাতিল করা উচিত। এতে মালিকরা তাদের সম্পদের পূর্ণ মূল্য রাখতে পারবে এবং বাজারে আরও বাড়ি বিক্রির সুযোগ তৈরি হবে।
চতুর্থত, বাড়ি মূলত পরিবারগুলোর জন্য, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা হেজ ফান্ডের জন্য নয়। ২০২৪ সালে প্রায় ৪,৫০,০০০ একক পরিবারের বাড়ি বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানাধীন ছিল, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য প্রতিযোগিতা আরও কঠিন করে। সরকারকে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর একক বাড়ি মালিকানা সীমিত করতে হবে।
পঞ্চমত, সুদের হার কমানো এবং ব্যাংকগুলোর জন্য নিম্ন সুদের মর্টগেজ অফার করার প্রণোদনা দেওয়া জরুরি। কম সুদে ঋণ পাওয়া গেলে, ক্রেতারা উচ্ছ্বসিত হয়ে বাড়ি কিনতে সক্ষম হবেন।
শেষত, ফ্যানি মে এবং ফ্রেডি ম্যাককে প্রাইভেটাইজ করা উচিত। ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের পর থেকে সরকার তাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে। বর্তমানে তারা স্থিতিশীল ও লাভজনক, তাই প্রাইভেটাইজ করলে ঋণ সংগ্রহের ক্ষমতা বাড়বে এবং ভবিষ্যৎ বাড়ি ক্রেতাদের জন্য আরও মর্টগেজ সহজলভ্য হবে।
যখন অনেকেই বাড়ি কেনার স্বপ্ন ত্যাগ করছেন, তখন সরকারকে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। ভাড়া নেওয়া সুবিধাজনক হতে পারে, কিন্তু তা অন্য কারো জন্য সম্পদ তৈরি করে। নিজের বাড়ি থাকা এবং তার মূল্যবৃদ্ধি দেখার অভিজ্ঞতা তুলনাহীন। এখনই পদক্ষেপ নিলে সরকার বাড়ি মালিকানা পুনরায় পুনর্জাগৃত করতে পারে।